নতুন চাকরি মানেই একরাশ আনন্দ, উন্নত বেতন আর উজ্জ্বল ভবিষ্যতের হাতছানি। কিন্তু এই খুশির জোয়ারে গা ভাসিয়ে অনেকেই এমন এক ভুল করে বসেন, যার মাসুল গুনতে হয় অবসরের সময়। অধিকাংশ কর্মী চাকরি বদলানোর সঙ্গে সঙ্গেই পুরনো প্রভিডেন্ট ফান্ড বা ইপিএফও (EPFO) অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে টাকা তুলে নেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সিদ্ধান্ত আপনার ভবিষ্যতের আর্থিক নিরাপত্তার পথে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
কেন ইপিএফ অ্যাকাউন্ট চালু রাখা জরুরি? প্রথমত, মনে রাখতে হবে প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা কোনো বাড়তি উপহার নয়, এটি আপনার দীর্ঘদিনের কষ্টের সঞ্চয় যা সরকারের কাছে সুরক্ষিত থাকে। আপনি যদি টাকা না তুলে অ্যাকাউন্টটি নতুন কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত (Transfer) করেন, তবে আপনার জমানো টাকার ওপর চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ বাড়তে থাকে। বর্তমানে ইপিএফও বার্ষিক ৮.২৫ শতাংশ হারে সুদ দিচ্ছে, যা বর্তমান বাজারে যেকোনো নামী ব্যাঙ্কের ফিক্সড ডিপোজিট (FD)-র তুলনায় অনেকটাই বেশি।
বিশেষ করে ২৫ থেকে ৩০ বছর বয়সী তরুণ তুর্কিদের জন্য এই পরামর্শ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি এখন থেকে পরবর্তী ২৫-৩০ বছর এই অ্যাকাউন্টটি নিরবচ্ছিন্নভাবে চালিয়ে যান, তবে জমানো সুদের অংকটি অবসরের সময় এক বিশাল পুঁজিতে পরিণত হবে। টাকা তুলে নিলে আপনি কেবল তাৎক্ষণিক কিছু সুবিধা পাবেন, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদী ‘পাওয়ার অফ কম্পাউন্ডিং’-এর লাভ থেকে বঞ্চিত হবেন।
তাই কেরিয়ারের শুরুতে বা মাঝপথে চাকরি পরিবর্তন করলেও পুরনো ইউএএন (UAN) নম্বরটি ব্যবহার করে আপনার পিএফ ব্যালেন্স নতুন সংস্থায় ট্রান্সফার করে নিন। মনে রাখবেন, অল্প অল্প জমানো এই টাকাই বার্ধক্যের সেরা লাঠি হয়ে উঠতে পারে। আজকের সামান্য সচেতনতা আপনার অবসর জীবনকে করে তুলতে পারে নিশ্চিন্ত ও সচ্ছল।