কোটা বিরোধী আন্দোলনের প্রথম সারির মুখ এবং ‘ইনকিলাব মঞ্চ’-এর মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ওপার বাংলা এখন রণক্ষেত্র। গত ১২ ডিসেম্বর ঢাকায় গুলিবিদ্ধ হওয়া হাদির বৃহস্পতিবার রাতে সিঙ্গাপুরে মৃত্যু হওয়ার খবর পৌঁছাতেই গোটা বাংলাদেশজুড়ে শুরু হয়েছে তাণ্ডব। এই উত্তাল পরিস্থিতির মাঝেই ময়মনসিংহে এক হিন্দু যুবককে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে মারার এক নৃশংস খবর সামনে এসেছে।
ময়মনসিংহে চরম বর্বরতা: বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার দুবালিয়া পাড়া এলাকায় দীপুচাঁদ দাস নামে এক হিন্দু যুবককে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠেছে উত্তেজিত জনতার বিরুদ্ধে।
ঘটনার বিবরণ: পেশায় কারখানার শ্রমিক দীপুচাঁদের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে রাত ৯টা নাগাদ হামলা চালানো হয়।
নৃশংসতা: উত্তেজিত জনতা তাঁকে বেধড়ক মারধর করার পর গাছের সঙ্গে বেঁধে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। পরে পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। এই ঘটনায় এখনও কোনও মামলা দায়ের করা হয়নি।
ভারত-বিদ্বেষ ও সংবাদমাধ্যমে হামলা
হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে ভারত-বিরোধী মনোভাব চরম আকার নিয়েছে।
সংবাদমাধ্যমে হামলা: ঢাকার একাধিক প্রথম সারির সংবাদমাধ্যমের অফিসে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
ভিসাকেন্দ্র বন্ধ: নিরাপত্তার স্বার্থে ভারত সরকার রাজশাহী ও খুলনার ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্র (IVAC) অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে। তবে ঢাকার ভিসাকেন্দ্রটি খোলা রাখা হয়েছে।
বিক্ষোভ: রাজশাহীতে ‘জুলাই ৩৬ মঞ্চ’-এর ভারত-বিরোধী মিছিল পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। বিক্ষোভকারীরা ভারতের বিরুদ্ধে ‘আগ্রাসন’ ও ‘হস্তক্ষেপ’-এর স্লোগান দিচ্ছে।
শরিফ ওসমান হাদিকে গত ১২ ডিসেম্বর বিজয়নগরে মাথায় গুলি করা হয়েছিল। সংকটাপন্ন অবস্থায় তাঁকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুর পাঠানো হলেও শেষরক্ষা হয়নি। তাঁর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশজুড়ে এক দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস। তবে এই শোকের আবহকে হাতিয়ার করে কট্টরপন্থী সংগঠনগুলো দেশের আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটাচ্ছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।