বিজ্ঞানের নিয়ম বলছে এটা অসম্ভব, কিন্তু সরকারি নথি বলছে এটাই সত্যি! মহারাষ্ট্রের যবতমাল জেলার ছোট্ট গ্রাম শেন্দুরসানি। মেরেকেটে দেড় হাজার মানুষের বাস। কিন্তু গত সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বরের সিভিল রেজিস্ট্রেশন সিস্টেমের (CRS) খতিয়ান দেখে চোখ কপালে উঠেছে প্রশাসনের। মাত্র ৯০ দিনে এই গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে নথিভুক্ত হয়েছে ২৭ হাজার শিশুর জন্মের তথ্য!
কীভাবে এই ‘ভুতুড়ে’ জন্ম সম্ভব হল? তদন্তে নেমে যা উঠে আসছে, তা কোনো অলৌকিক ঘটনা নয়, বরং এক ভয়াবহ সাইবার ক্রাইম।
মুম্বই যোগ: প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, এই জালিয়াতি করা হয়েছে মুম্বইয়ে বসে। সরকারি পোর্টালে অবৈধভাবে ঢুকে এই বিপুল সংখ্যক শিশুর জন্ম নথিভুক্ত করা হয়েছে।
বাংলা ও উত্তরপ্রদেশের নাম: সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হল, মহারাষ্ট্রের গ্রামে জন্ম নথিভুক্ত হলেও শিশুদের তালিকায় নাম পাওয়া গিয়েছে অধিকাংশ পশ্চিমবঙ্গ এবং উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দাদের। কেন ভিনরাজ্যের নাম ব্যবহার করে এই জালিয়াতি, তা নিয়ে ঘনাচ্ছে রহস্য।
তৎপর বিজেপি নেতা ও প্রশাসন এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই শেন্দুরসানি গ্রামে হাজির হন বিজেপি নেতা কীর্তি সোমাইয়া। তিনি পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেন। সোমাইয়া জানিয়েছেন:
“এটি একটি সুপরিকল্পিত জালিয়াতি। আমি মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিণ্ডের কাছে আবেদন করব যাতে এই ভুয়ো তালিকা অবিলম্বে বাতিল করা হয় এবং দোষীদের চিহ্নিত করা হয়।”
তদন্তে পুলিশ ও সাইবার বিশেষজ্ঞরা পুলিশ এই ঘটনার নেপথ্যে থাকা বড় কোনো চক্রের খোঁজ শুরু করেছে। সাইবার বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকারি পোর্টালে এই স্তরের অনুপ্রবেশ এবং বিপুল ডেটা এন্ট্রি যথেষ্ট উদ্বেগের। প্রশ্ন উঠছে— ভিনরাজ্যের বাসিন্দাদের নাম ব্যবহার করে কি কোনো অবৈধ নাগরিকত্ব বা সরকারি প্রকল্পের সুবিধা নেওয়ার ছক কষা হয়েছিল?
বিপুল সংখ্যক এই ভুয়ো বার্থ সার্টিফিকেট তৈরির উদ্দেশ্য খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। মুম্বই থেকে কীভাবে মহারাষ্ট্রের প্রত্যন্ত জেলার ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা হল, এখন সেটাই দেখার।