অবসরগ্রহণের ঠিক মুখে এসে প্রভাবশালী মহলের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে রায়দান কি বিচারব্যবস্থার নতুন ‘ট্রেন্ড’ হয়ে দাঁড়াচ্ছে? মধ্যপ্রদেশের এক জেলা জজের সাসপেনশন মামলা চলাকালীন এমনই বিস্ফোরক পর্যবেক্ষণ করল সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির বেঞ্চ এদিন সাফ জানান, অবসরের ঠিক আগে বিচারকদের অতি-সক্রিয় হয়ে রায় দেওয়ার এই দুর্ভাগ্যজনক প্রবণতা বিচারব্যবস্থার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে।
আদালত সূত্রে খবর, মধ্যপ্রদেশের পান্না জেলার মুখ্য জেলা ও দায়রা বিচারক রাজারাম ভার্তিয়াকে তাঁর অবসরের মাত্র ১১ দিন আগে সাসপেন্ড করেছিল মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট। অভিযোগ, এক রাজনৈতিক নেতার মালিকানাধীন স্টোন ক্রাশার ফার্মের ১০০ কোটি টাকার জরিমানা মকুব করে দিয়েছিলেন তিনি। জেলা কালেক্টরের দেওয়া সেই জরিমানার নির্দেশ খারিজ করা নিয়েই শুরু হয় বিতর্ক। হাইকোর্টের প্রশাসনিক বিভাগ মনে করে, এই রায়ের নেপথ্যে অন্য কোনো অভিসন্ধি থাকতে পারে।
সুপ্রিম কোর্টে আবেদনকারীর আইনজীবী সওয়াল করেন যে, ভালো সার্ভিস রেকর্ড থাকা সত্ত্বেও স্রেফ একটি রায়ের ভিত্তিতে কেন সাসপেনশন? এর জবাবে প্রধান বিচারপতি বলেন, “আবেদনকারী অবসরের ঠিক আগে হঠাৎ ছক্কা হাঁকাতে শুরু করেন। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। ভুল রায়ের জন্য শাস্তি হয় না ঠিকই, কিন্তু রায় যদি স্পষ্টতই অসৎ উদ্দেশ্যে দেওয়া হয়, তবে কড়া পদক্ষেপ আবশ্যিক।” শীর্ষ আদালত আরও মনে করিয়ে দেয় যে, সেই সময় ওই বিচারক জানতেন না যে তাঁর চাকরির মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ছে, তাই তড়িঘড়ি এই রায়গুলি দেওয়া হয়েছিল। হাইকোর্টকে এড়িয়ে সরাসরি সুপ্রিম কোর্টে আসা নিয়েও উষ্মা প্রকাশ করেছে বেঞ্চ।