বাজারে গিয়ে ১০ বা ২০ টাকার নোট খুঁজে পাচ্ছেন না? দিলেও নিতে চাইছে না দোকানি বা অটো চালক? এই সমস্যায় আপনি একা নন, বর্তমানে গোটা দেশজুড়ে ছোট মূল্যের নোটের হাহাকার তৈরি হয়েছে। পরিস্থিতি এতটাই ঘোরালো যে, এবার সরাসরি রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (RBI)-কে হস্তক্ষেপ করার আর্জি জানিয়ে চিঠি দিল কর্মচারী সংগঠন।
কেন মিলছে না ছোট নোট?
অল ইন্ডিয়া রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশন (AIRBEA) জানিয়েছে, শহর থেকে গ্রাম— সর্বত্রই ১০, ২০ এবং ৫০ টাকার নোটের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। অথচ বাজারে ১০০, ২০০ বা ৫০০ টাকার নোটের কোনো অভাব নেই। চিঠিতে জানানো হয়েছে:
এটিএম-এর ভূমিকা: এটিএম থেকে মূলত ৫০০ বা ২০০ টাকার মতো বড় নোট বেরোয়, ফলে খুচরো টাকার জোগান কমেছে।
ব্যাঙ্কের অপারগতা: ব্যাঙ্ক শাখাগুলোও গ্রাহকদের চাহিদামতো ছোট নোট সরবরাহ করতে পারছে না।
বিপর্যস্ত দৈনন্দিন জীবন: স্থানীয় পরিবহন, মুদিখানার কেনাকাটা এবং সাধারণ খুচরো লেনদেনে এর ফলে ব্যাপক শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
ইউনিয়নের মতে, কেন্দ্রীয় সরকার ডিজিটাল পেমেন্টের প্রচার করলেও ভারতের বিশাল এক জনগোষ্ঠী এখনও দৈনন্দিন প্রয়োজনে নগদের ওপর নির্ভরশীল। প্রচলিত মুদ্রার পরিমাণ ক্রমাগত বাড়লেও ছোট নোটের বদলে কয়েন ব্যবহারের প্রচেষ্টা সেভাবে সফল হয়নি। ফলে খুচরো লেনদেনে এক প্রকার অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে AIRBEA ডেপুটি গভর্নর টি. রবি শঙ্করকে চিঠিতে কিছু জরুরি পরামর্শ দিয়েছে: ১. বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক এবং RBI কাউন্টারগুলির মাধ্যমে দ্রুত ছোট নোটের প্রচলন বাড়ানো। ২. গ্রামীণ এলাকায় স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও পঞ্চায়েতের মাধ্যমে খুচরো টাকা পৌঁছে দেওয়া। ৩. খুচরো মুদ্রার প্রচলন বাড়াতে ফের দেশজুড়ে ‘কয়েন মেলা’ বা মুদ্রা মেলার আয়োজন করা।
অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগছে, তবে কি ছোট নোট তুলে দিয়ে শুধু কয়েন চালানো হবে? যদিও রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তরফে এখনও এমন কোনো সরকারি ঘোষণা করা হয়নি। তবে নোটের উৎপাদন কমিয়ে কয়েনের ওপর জোর দেওয়ার যে প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, তাতে সাধারণ মানুষের দুশ্চিন্তা বাড়ছে।
এখন দেখার, কর্মচারী সংগঠনের এই চিঠির পর ১০ ও ২০ টাকার নোটের জোগান বাড়াতে RBI ঠিক কী বড় সিদ্ধান্ত নেয়।