নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের যৌথ সাংবাদিক সম্মেলন ভারত-রাশিয়া সম্পর্ককে এক নতুন মাত্রা দিয়েছে। এই সময় প্রধানমন্ত্রী মোদী বড় ঘোষণা করে বলেছেন যে, এখন থেকে রাশিয়ার নাগরিকদের ভারতে আসার জন্য ৩০ দিনের ফ্রি ই-ট্যুরিস্ট ভিসা দেওয়া হবে। এটিকে দুই দেশের মানুষের মধ্যে পারস্পরিক চলাচল বাড়াতে এবং সম্পর্ককে আরও গভীর করার দিকে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ভারত-রাশিয়া: ৬টি বড় চুক্তি: যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। দুটি দেশ সহযোগিতা এবং মাইগ্রেশন, অস্থায়ী শ্রমিক কার্যকলাপ, স্বাস্থ্যসেবা ও চিকিৎসা শিক্ষা, খাদ্য নিরাপত্তা ও মান, পোলার শিপস এবং মেরিটাইম কো-অপারেশন, এবং সার (Fertilizer) সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। এই চুক্তিগুলি উভয় দেশের মধ্যে কৌশলগত ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়াতে সাহায্য করবে।
ভারত-রাশিয়া বন্ধুত্ব ‘ধ্রুব তারার মতো’: প্রধানমন্ত্রী মোদী পুতিনকে তাঁর বন্ধু উল্লেখ করে বলেন, পুতিনের দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে গত আড়াই দশকে এই অংশীদারিত্ব ক্রমাগত শক্তিশালী হয়েছে। তিনি বলেন, ২৫ বছর আগে পুতিনের নেতৃত্বে দুই দেশের সম্পর্কের মজবুত ভিত্তি স্থাপিত হয়েছিল। এই সময়ে বিশ্ব অনেক বড় সংকট দেখেছে, কিন্তু তার সত্ত্বেও ভারত-রাশিয়া বন্ধুত্ব ‘ধ্রুব তারার মতো’ অটল রয়েছে।
পুতিনের বক্তব্য: জাতীয় মুদ্রায় ৯৬% বাণিজ্য: রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ডিনারের সময় তাঁর যে আলোচনা হয়েছে, তা ভারত-রাশিয়া বিশেষ এবং সুবিধাপ্রাপ্ত কৌশলগত অংশীদারিত্বের জন্য খুবই উপযোগী প্রমাণিত হয়েছে। পুতিন জানান, বর্তমানে ভারত-রাশিয়ার মধ্যে ৯৬ শতাংশ বাণিজ্য তাদের নিজস্ব জাতীয় মুদ্রায় হচ্ছে।
পুতিন এও বলেন, “আমরা ভারতের বৃহত্তম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরির প্রকল্পেও কাজ করছি। ছয়টি চুল্লির মধ্যে তিনটি ইতিমধ্যেই শক্তি নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত হয়েছে।” তিনি আশা প্রকাশ করেন, যদি ভারত এবং ইউরেশিয়ান ইকোনমিক ইউনিয়ন-এর মধ্যে ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট হয়, তবে উভয় পক্ষই এর বড় সুবিধা পাবে।
শক্তি, খনিজ এবং শিপবিল্ডিংয়ে সহযোগিতা: প্রধানমন্ত্রী মোদী পুতিনের এই সফরকে ‘বিশেষ’ আখ্যা দিয়ে বলেন, এই সফর এমন এক সময়ে হচ্ছে যখন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বহু ঐতিহাসিক পর্যায় অতিক্রম করছে। তিনি বলেন, ভারত-রাশিয়ার এনার্জি সিকিউরিটি পার্টনারশিপ একটি শক্তিশালী স্তম্ভ হিসেবে কাজ করছে। তিনি ক্রান্তীয় খনিজ (Critical Minerals) এবং শিপবিল্ডিংয়ে গভীর সহযোগিতাকে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ এবং কর্মসংস্থান বাড়ানোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন।