দেশজুড়ে ইন্ডিগোর একশোরও বেশি ফ্লাইট বাতিল হওয়ার জেরে কর্ণাটকের হুব্বলিতে তৈরি হল নাটকীয় পরিস্থিতি। নির্ধারিত দিনে কনের বাড়িতে পৌঁছতে না পেরে অবশেষে ভিডিও কলেই তাঁদের বিয়ের রিসেপশন পর্ব সারলেন দুই সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার নবদম্পতি।
বেঙ্গালুরুতে কর্মরত হুব্বলির মেধা ক্ষীরসাগর এবং ভুবনেশ্বরের সংগমা দাসের গত ২৩ নভেম্বর ভুবনেশ্বরে বিয়ে হয়েছিল। ৩ ডিসেম্বর কনের বাড়ি হুব্বলির গুজরাট ভবনে ছিল তাঁদের বিবাহোত্তর সংবর্ধনা (রিসেপশন)।
কিন্তু রিসেপশনের ঠিক আগের রাত থেকেই শুরু হয় চরম ভোগান্তি। ভুবনেশ্বর-বেঙ্গালুরু হয়ে হুব্বলি পৌঁছনোর জন্য নবদম্পতি যে ফ্লাইট ধরার কথা ছিল, তা বারবার বিলম্বের পরে ভোর ৪টেয় বাতিল বলে ঘোষণা করে ইন্ডিগো। ভুবনেশ্বর-মুম্বই-হুব্বলি রুটের আত্মীয়রাও একই দুর্ভোগের শিকার হন। রিসেপশনের সমস্ত আয়োজন সম্পূর্ণ, অতিথিরাও হাজির। কিন্তু নবদম্পতি আটকে ভুবনেশ্বরে।
শেষমেশ কনের মা-বাবা মণ্ডপে তৈরি দম্পতির আসনে বসেন। তাঁরাই নবদম্পতির বরণ এবং অন্যান্য অনুষ্ঠান সম্পন্ন করেন। আর দিব্যি সাজপোশাকে প্রস্তুত নবদম্পতি বহু দূর ভুবনেশ্বর থেকে ভিডিও কলের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যোগ দেন। অনুষ্ঠানস্থলের বড় পর্দায় ভেসে ওঠে তাঁদের উপস্থিতি।
কনের মা বলেন, “আমরা ভেবেছিলাম কোনোভাবে ওরা পৌঁছে যাবে। কিন্তু রাতেই ফ্লাইট বাতিলের খবর আসে। এত আত্মীয়-স্বজনকে ডাকা হয়েছে, শেষ মুহূর্তে অনুষ্ঠান বাতিল করা অসম্ভব ছিল। আলোচনা করে ঠিক করা হয়— রিসেপশন হবে, নবদম্পতি না হয় অনলাইনেই থাকুক।”
ইন্ডিগোর ভোগান্তি কেন? সংস্থা নিজেই স্বীকার করেছে যে, নতুন ফ্লাইট ডিউটি নর্মস (FDTL)-এর দ্বিতীয় দফা নিয়ম চালু হওয়ায় তাদের রোস্টার পরিকল্পনায় বড়সড় ত্রুটি তৈরি হয়েছে। এর জেরেই চলতি সপ্তাহে দিল্লি, মুম্বই, বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ, চেন্নাই-সহ একাধিক শহরে শতাধিক ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। বৃহস্পতিবার একদিনে ৫০০-রও বেশি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে, যা সংস্থার ২০ বছরের ইতিহাসে সর্বাধিক। ইন্ডিগো জানিয়েছে, পরিষেবা পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে ফেব্রুয়ারি ১০ পর্যন্ত সময় লাগবে। DGCA-কে তারা ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত আরও বহু ফ্লাইট বাতিলের আশঙ্কার কথা জানিয়েছে।