তৃণমূলের শৃঙ্খলা-রক্ষা কমিটি বৃহস্পতিবার হুমায়ুন কবীরকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দলের এই পদক্ষেপের পরই মুর্শিদাবাদের পর্যবেক্ষক ফিরহাদ হাকিম দাবি করেছেন, হুমায়ুনের এই বিদ্রোহী আচরণের পিছনে বিজেপির ‘অভিসন্ধি’ থাকতে পারে। শাসক দল যখন এই অভিযোগ তুলছে, তখনই পুরনো বিতর্ক উস্কে দিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বাম ও কংগ্রেস নেতৃত্ব।
কংগ্রেস নেতা তথা বহরমপুরের প্রাক্তন সাংসদ অধীর চৌধুরী বিস্ফোরক দাবি করে বলেন, গত লোকসভা নির্বাচনের সময় তাঁকে হারানোর জন্যই তৃণমূল হুমায়ুন কবীরকে ব্যবহার করেছিল। অধীরের অভিযোগ, সেই সময় হুমায়ুন যে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন, তা তৃণমূলের নির্দেশেই করা হয়েছিল। অধীর আরও দাবি করেন, সেই মন্তব্যকে হাতিয়ার করেই আইপ্যাক (I-PAC) হিন্দু অধ্যুষিত গ্রামগুলিতে প্রচার চালিয়েছিল, যা বিজেপিকে আসন জিততে সাহায্য করেছিল।
অধীর চৌধুরীর কড়া মন্তব্য, “সেদিন হুমায়ুন যে কাজ করেছে, তা মমতার ইশারায় করেছে। আজ হঠাৎ হুমায়ুন খারাপ হয়ে গেল? ব্যবহার কর আর ফেলে দাও, এটাই ওদের নীতি।”
সিপিএমের জেলা সম্পাদক জামির মোল্লারও বক্তব্য একই। তিনি বলেন, “মহম্মদ সেলিম ও অধীর চৌধুরীকে হারানোর জন্য ২০২৪ সালে হুমায়ুনকে দিয়ে মেরুকরণের রাজনীতি করানোর উদ্দেশ্যেই ৩০ শতাংশ-৭০ শতাংশ মন্তব্য করানো হয়েছিল। এখন বিজেপির দোষ দিলে হবে না।” বামেরা স্পষ্ট করে দিয়েছে, তৃণমূল তাদের রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য হুমায়ুনকে ব্যবহার করেছিল।
হুমায়ুন কবীর ঠিক কী কারণে বিদ্রোহী হয়ে উঠেছেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে, রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের ধারণা, জেলায় বাম-কংগ্রেসের জোটবদ্ধ শক্তি আবারও জমি শক্ত করছে। এই পরিস্থিতিতে হুমায়ুনকে সরিয়ে দেওয়াটা আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের জন্য আদৌ লাভজনক হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহলে।