দেশের ৫২তম প্রধান বিচারপতি বিআর গবাই তাঁর ফেয়ারওয়েল পার্টিতে অনুশোচনা করে বলেছিলেন যে, তিনি তাঁর কার্যকালে কোনো মহিলা বিচারপতিকে তুলে ধরতে পারেননি। সেই অনুশোচনা এবং শীর্ষ আদালতে মহিলা বিচারপতির ঘাটতি পূরণের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ দেশের সকল বার কাউন্সিলে (Bar Council of India) মহিলাদের সংরক্ষণ সুনিশ্চিত করার জন্য এক ঐতিহাসিক নির্দেশ জারি করেছে।
নির্দেশের মূল কথা:
প্রধান বিচারপতি নির্দেশ দিয়েছেন যে, রাজ্য ভিত্তিতে তৈরি প্রতিটি বার কাউন্সিলে মহিলাদের অংশীদারিত্ব এবং সংরক্ষণ সুনিশ্চিত করতে হবে।
এর জন্য প্রয়োজন পড়লে নীতি কাঠামোতেও বদল আনতে হবে।
মহিলাদের জন্য অন্ততপক্ষে ৩০ শতাংশ আসন সংরক্ষিত রাখতে হবে।
ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ: “ঠিক যে ভাবে সংসদে মহিলাদের আসন সংরক্ষণকে সুনিশ্চিত করা হয়েছে, ঠিক একই পদ্ধতিতে দেশের বার কাউন্সিলগুলিতেও মহিলাদের জন্য আসন সংরক্ষণ করতে হবে। পাশাপাশি, মহিলারা যাতে বার কাউন্সিলে উচ্চ পদ পান সেটাও দেখতে হবে।”
নির্দেশের কারণ:
সম্প্রতি দুই মহিলা আইনজীবী এই মর্মেই দেশের শীর্ষ আদালতে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন। তাঁরা জানিয়েছিলেন, আইন ও বিচারব্যবস্থার মতো পেশার প্রতি স্তরে মেয়েরা নিজেদের উত্থান ঘটালেও বার কাউন্সিলের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে তাঁরা যেন কার্যত ‘অদৃশ্য’ এবং ‘যোগ্য হয়েও বঞ্চিত’।
তাঁদের এই পর্যবেক্ষণ খাতায় কলমেও প্রতিফলিত হয়েছে। বর্তমানে দেশের ১৮টি রাজ্যের বার কাউন্সিলে মোট ৪৪১ জন নির্বাচিত প্রতিনিধির মধ্যে মাত্র ৯ জন মহিলা। অর্থাৎ, মহিলাদের অংশীদারিত্ব মাত্র ২ শতাংশ। এই বঞ্চনার চিত্রই বিচারপতিদের এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিতে চালিত করেছে।