নিয়মিত শরীরচর্চা, হাঁটাচলা, জিমে ঘাম ঝরানো – ওজন কমাতে চেষ্টার কোনো ত্রুটি রাখছেন না অনেকেই। ডায়েটেও বেশ সচেতন। তবুও যদি ওজন না কমে, তাহলে এর কারণ লুকিয়ে থাকতে পারে আপনার প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় থাকা কিছু ক্ষতিকর খাবারের মধ্যে। যতক্ষণ না আপনি এই পাঁচ ধরনের খাবারকে সম্পূর্ণভাবে বিদায় জানাচ্ছেন, ততক্ষণ ওজন কমানোর প্রচেষ্টা কঠিন হয়ে পড়বে।
প্রথমত, চিনি ও চিনিযুক্ত খাবার:
প্রতিদিনের চায়ের কাপ থেকে শুরু করে মিষ্টি পানীয়, মিষ্টি, কেক, বিস্কুট – এই সমস্ত কিছুর মধ্যেই রয়েছে উচ্চমাত্রার চিনি। এই চিনি শরীরের রক্তে শর্করার পরিমাণ দ্রুত বাড়িয়ে দেয়। ফলস্বরূপ, ইনসুলিনের মাত্রাও বেড়ে যায় এবং শরীরে ফ্যাট জমা হতে শুরু করে। বিশেষ করে পেটের চারপাশে চর্বি খুব দ্রুত জমে। তাই ওজন কমাতে চাইলে প্রথমেই বাদ দিতে হবে রিফাইনড সুগার বা পরিশোধিত চিনি।
দ্বিতীয়ত, রিফাইনড কার্বোহাইড্রেট:
সাদা চাল, ময়দা, নুডলস, পাউরুটি ইত্যাদি খাবার তৈরির সময় প্রসেসিংয়ের মাধ্যমে ফাইবার বের করে নেওয়া হয়। এর ফলে এই খাবারগুলি খুব তাড়াতাড়ি হজম হয়ে যায় এবং রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ হঠাৎ করে বেড়ে যায়। এই ধরনের খাবার খেলে দ্রুত খিদে পায় এবং বারবার খাওয়ার প্রবণতা বাড়ে, যা ওজন বৃদ্ধির অন্যতম কারণ।
তৃতীয়ত, ফাস্ট ফুড ও প্রক্রিয়াজাত খাবার:
মোবাইলে স্ক্রল করতে করতে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, বার্গার, চিপস খাওয়ার অভ্যাস থাকলে সাবধান হোন। এই খাবারগুলিতে থাকে প্রচুর পরিমাণে ট্রান্স ফ্যাট, অতিরিক্ত লবণ ও প্রিজারভেটিভ, যা শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এর ফলে শুধু ওজনই বাড়ে না, সেই সঙ্গে কোলেস্টেরল ও রক্তচাপও বৃদ্ধি পায়।
চতুর্থত, সোডা ও কার্বোনেটেড ড্রিঙ্কস:
অনেকেই মনে করেন ডায়েট কোলা খেলে শরীরের কোনো ক্ষতি হয় না। কিন্তু এতে থাকা কৃত্রিম সুইটনারও ওজন বৃদ্ধির কারণ হতে পারে। এই ধরনের পানীয় খাবারের হজম প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে এবং শরীরে ফোলাভাব বা ব্লটিং বাড়ায়।
পঞ্চমত, অতিরিক্ত প্যাকেটজাত ‘হেলদি’ স্ন্যাকস:
প্রোটিন বার, গ্রানোলা, মুসলি – এই ধরনের স্ন্যাকসকে অনেকে স্বাস্থ্যকর মনে করে বেশি পরিমাণে খেয়ে ফেলেন। অথচ এই খাবারগুলিতে অনেক সময় লুকানো চিনি, কৃত্রিম ফ্লেভার ও অপ্রয়োজনীয় ক্যালোরি থাকে। ফলে ওজন কমার বদলে উল্টে বেড়ে যেতে পারে।
ওজন কমানোর জন্য শুধুমাত্র ব্যায়াম করাই যথেষ্ট নয়, আপনার খাদ্যতালিকাও সঠিক হওয়া প্রয়োজন। এই পাঁচটি খাবার থেকে নিজেকে দূরে রাখতে পারলে তবেই আপনি আপনার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবেন। তাই আজ থেকেই এই খাবারগুলো ত্যাগ করার প্রতিজ্ঞা নিন।