পুষ্টি সচেতনতার পাঠ এবার হাতে-কলমে! পূর্ব বর্ধমানের স্কুলে মিড-ডে-মিলের জন্য কিচেন গার্ডেন বা ‘পুষ্টি বাগান’

বিদ্যালয়ের পরিবেশকে কেবল বই-খাতার গণ্ডিতে আবদ্ধ না রেখে ছাত্র-ছাত্রীদের সুস্বাস্থ্য গঠন এবং পুষ্টি সচেতনতার পাঠ দিতে এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে পূর্ব বর্ধমানের এক শিক্ষাঙ্গনে। বিদ্যালয়ের মধ্যেই গড়ে তোলা হলো মিড ডে মিলের কিচেন গার্ডেন বা নিউট্রিশনাল গার্ডেন।

কাঞ্চননগর ডিএন দাস হাইস্কুলের অভিনব প্রচেষ্টা:

পূর্ব বর্ধমানের কাঞ্চননগর ডিএন দাস হাইস্কুল অন্যান্য বিদ্যালয়ের থেকে ভিন্নভাবে সেজে উঠেছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ড: সুভাষচন্দ্র দত্তের তত্ত্বাবধানে এখানকার প্রতিটি কোনায় হাতে-কলমে নানান পাঠ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।

পুষ্টি বাগানে চাষ: রান্নাঘর সংলগ্ন এই পুষ্টি বাগানের দায়িত্ব নিয়েছে বর্ধমানের এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। এখানে প্রায় ১২ রকমের শাক-সবজির চারা রোপণ করা হয়েছে—যার মধ্যে রয়েছে বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি, পালং শাক, নটে শাক, টোম্যাটো, লঙ্কা, সিম ও বিনস।

মিড-ডে-মিলে ব্যবহার: উৎপাদিত এই টাটকা, কীটনাশকমুক্ত শাক-সবজি দিয়েই হবে মিড-ডে-মিলের রান্না।

সার ও কীটনাশক: প্রধান শিক্ষক ড: সুভাষচন্দ্র দত্ত জানান, এই বাগান গড়ে তুলতে কোনো কীটনাশক দেওয়া হয়নি। জীবাণুনাশ করতে ব্যবহার করা হয়েছে গোবর ও সরষের খোল, ফলে পড়ুয়ারা রাসায়নিক সার ছাড়াই পুষ্টিকর খাদ্য পাবে।

অন্যান্য আকর্ষণ: এই বিদ্যালয়ে একটি গাছে পাখিরালয়ও রয়েছে, যেখানে আসে নানান প্রজাতির পাখি।

শিক্ষার্থীদের জন্য সুবিধা:

এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হলো পুঁথিগত বিদ্যার মধ্যেই সীমাবদ্ধ না থেকে পঠন-পাঠনকে জীবনমুখী ও প্রকৃতি-সংযুক্ত করা।

পুষ্টি শিক্ষা: সুষম আহারের গুরুত্ব ও সতেজ খাদ্যের উপকারিতা নিয়ে শিক্ষার্থীদের সচেতন করাই এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য।

হাতে-কলমে শিক্ষা: ১২রকম সবজির উপকারিতা ছবি সহ ফেস্টুনের মধ্যে বাগানের খাঁচায় ঝোলানো হয়েছে। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা একদিকে যেমন খাবারের মান সম্পর্কে সচেতন হচ্ছে, তেমনই অন্যদিকে পুষ্টি সম্পর্কে হাতে-কলমে শিক্ষা পাচ্ছে।

পঠন-পাঠনে আগ্রহ: প্রধান শিক্ষকের মতে, এই ধরনের পরিবেশের কারণে পড়ুয়ারা পঠন-পাঠনেও বেশি আগ্রহী হবে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy