শীতকাল শুরু হতেই ঘন কুয়াশার আড়াল থেকে চোরাশিকারীরা বন্যপ্রাণ নিধন ও পাচারের পরিকল্পনা কষে। তাদের এই কার্যকলাপ রুখতে এবার আরও কড়া হচ্ছে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান। জলদাপাড়া ও গরুমারা জাতীয় উদ্যানের পক্ষ থেকে ড্রোন ক্যামেরায় নজরদারি শুরু হয়েছে এবং বন বিভাগের একটি বিশেষ টিম এই কাজে নিয়োজিত।
বন বিভাগের আধিকারিকদের দাবি, ড্রোনের ব্যবহারের ফলে চোরাশিকার দমন ছাড়াও নিম্নলিখিত কাজগুলি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে:
বনাঞ্চলে আগুন নিয়ন্ত্রণ।
বন্যপ্রাণীর চলাফেরা পর্যবেক্ষণ।
নদী ও জলাশয়ের পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ।
সংবেদনশীল করিডোরগুলিতে মানুষের অনুপ্রবেশ নিয়ন্ত্রণ।
ড্রোনের কার্যকারিতা ও সংখ্যা বৃদ্ধি:
বর্তমান পরিস্থিতি: জলদাপাড়া এবং গরুমারায় এই মুহূর্তে মোট ১০টি ড্রোন ক্যামেরা রয়েছে। এর মধ্যে জলদাপাড়ায় ব্যবহৃত হচ্ছে পাঁচটি ড্রোন।
বিগত সাফল্য: গত তিন বছর ধরে জলদাপাড়ায় ড্রোনের ব্যবহার হচ্ছে। সাম্প্রতিক বন্যা পরিস্থিতিতে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান থেকে ভেসে যাওয়া ১১টি গন্ডারকে ড্রোনের মাধ্যমে চিহ্নিত করে জাতীয় উদ্যানে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছিল।
দ্রুত শিকার বিরোধী অভিযান: বন আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ড্রোনের মাধ্যমে জঙ্গল ঘেঁষা এলাকা থেকে কোনও সন্দেহজনক কিছু শনাক্ত হলে তা দ্রুত গ্রাউন্ড টিমকে জানানো হচ্ছে। এতে শিকার বিরোধী অভিযান অনেক দ্রুত ও কার্যকর হয়েছে।
প্রস্তাব: বন আধিকারিকরা মনে করছেন, রাতে ভালো নজরদারির জন্য থার্মাল ক্যামেরাযুক্ত অত্যাধুনিক ড্রোনের ব্যবহার বৃদ্ধি করা উচিত। জলদাপাড়া ও গরুমারা মিলিয়ে আরও দশটি ড্রোন বৃদ্ধি করলে নিখুঁত নজরদারি চালানো সম্ভব। সেই প্রস্তাব ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।
জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের ডিএফও প্রবীণ কাশওয়ান ফোনে জানান, “জঙ্গলে এমন অনেক রুট আছে, যেখানে হেঁটে পৌঁছনো সম্ভব নয়। সেখানে ড্রোন পৌঁছে যাচ্ছে। সেই স্থানের পরিস্থিতি আমরা নজরে রাখতে পারছি সহজেই।”