রাজ্য জুড়ে যখন এসআইআর (SIR) আবহে জন্ম-মৃত্যু সার্টিফিকেট নিয়ে মানুষের মধ্যে দুশ্চিন্তা বাড়ছে, ঠিক সেই মুহূর্তে মালদহের পর মুর্শিদাবাদ থেকেও বাংলার মানুষকে অভয়বার্তা ও গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বুধবার মালদহ থেকে তিনি বলেছিলেন, “কেউ ভয় পাবেন না, ভীত হবেন না। নিশ্চিন্তে থাকুন।” তিনি আশ্বাস দিয়েছিলেন যে, কাউকে ডিটেনশন ক্যাম্পে যেতে হবে না। বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী SIR প্রক্রিয়া এবং ভোটার তালিকা নিয়ে এক নতুন বার্তা দিলেন:
ভোটার লিস্ট এবং হিয়ারিং নিয়ে বার্তা:
ভোটার তালিকা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি এখনও ভোটার লিস্টে নাম তুলিনি। আপনারা না তুললে আমিও তুলব না।”
এসআইআর প্রক্রিয়ার ধোঁয়াশাপূর্ণ বিষয় ‘হিয়ারিং’ নিয়ে তিনি পরামর্শ দেন, “হিয়ারিংয়ে ডাকলে যাবেন। না হলে আপনার নামটা বাদ দিতে হবে।”
সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ:
জনসাধারণের সুবিধার্থে মুখ্যমন্ত্রী গ্রাম সভা স্তরে নতুন উদ্যোগের কথা ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, “গ্রাম সভাতে ‘May I Help You’ বলে একটা ক্যাম্প হবে। যার কোনও সমস্যা হবে, সেখানে যাবেন।”
বিজেপিকে কড়া আক্রমণ:
ডিটেনশন ক্যাম্প ও এসআইআর ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রী বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করেন। তিনি স্পষ্ট জানান, “সরকার সরকারের কাজ করবে। পার্টি পার্টির কাজ করবে। বিজেপি যদি ভাবে গায়ের জোরে দখল করবে, তাহলে তা হবে না।”
তিনি অভিযোগ করেন, এসআইআর করতে গিয়ে যারা মারা গিয়েছেন, তাদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি হিন্দু। এর ফলে বিজেপি’র জনপ্রিয়তা কমেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এসআইআর করে বিজেপি আরও গেছে। আরও যাবে। ওদের ভাঁড়ার শূন্য করে দিন।”
‘বাংলাদেশি’ এবং রোহিঙ্গারা:
মুখ্যমন্ত্রী আরও সংযোজন করেন, “ভাগ্গিস আমি বীরভূমে জন্মেছিলাম। না হলে আমাকেও বাংলাদেশি বলে দিত।” তিনি স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দেন, “আমার গলা কেটে দিলেও আমি কাউকে তাড়াব না। কোনও ডিটেনশন ক্যাম্প করব না।”
রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে তিনি প্রশ্ন তোলেন, “রোহিঙ্গারা কোথা থেকে এল? বর্ডার কার হাতে? ভিতরে ভিতরে কারও কারও সঙ্গে যোগাযোগ করবে। এটা তো হয় না।”
তিনি সবশেষে বলেন, “আমি যতদিন বাঁচব, সব ধর্মের পরম্পরা মানব, সব ধর্মকে সন্মান জানাব।” একই সঙ্গে বিজেপি-র বিরুদ্ধে চুরির টাকা ও মিথ্যা প্রচারের অভিযোগ তুলে জনসাধারণকে সতর্ক থাকতে বলেন।