পেট্রোল-ডিজেল থেকে বিদেশ শিক্ষা! টাকার দর কমায় কোন কোন জিনিসের দাম বাড়বে? কারণ জানাল কেন্দ্র

ভারতীয় অর্থনীতির চালচিত্রে বড়সড় পরিবর্তন এসেছে। ফের রেকর্ড পতন হয়েছে টাকার দামে। মার্কিন ডলারের তুলনায় ভারতীয় রুপির মূল্য কমে যাওয়ায় দেশবাসীর ওপর বড় প্রভাব পড়তে পারে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, নিত্য প্রয়োজনীয় অনেক জিনিসের দাম আরও বাড়বে।টাকার দামের রেকর্ড পতনবুধবার ভারতীয় রুপির দাম মার্কিন ডলারের বিপরীতে ৯০ টাকা ছাড়িয়ে যায়, যা এখনও পর্যন্ত সর্বনিম্ন স্তর।ডলারের বিপরীতে টাকার দাম ৯০.১৩-এর নীচে নেমে গিয়েছিল। বৃহস্পতিবার তা আরও কমে ৯০ টাকা ৪৩ পয়সায় চলে আসে।টাকার দর পতনের মূল প্রভাবটাকার দাম কমে যাওয়ার ফলে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বড় প্রভাব পড়বে, কারণ এর ফলে আমদানি আরও ব্যয়বহুল হয়ে উঠবে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ডলার ব্যবহার হওয়ায়, রুপি দুর্বল হলে একই পরিমাণ ডলার কেনার জন্য আমাদের বেশি রুপি খরচ করতে হবে।ক্ষেত্রপ্রভাবআমদানিকারকক্ষতিগ্রস্ত (আমদানি খরচ বৃদ্ধি)রপ্তানিকারকলাভবান (বিদেশ থেকে বেশি রুপি পাচ্ছে)কোন কোন জিনিসের দাম বাড়বে?রুপির এই তীব্র পতনের ফলে নিম্নলিখিত জিনিসগুলির দাম সবচেয়ে বেশি বাড়বে:জ্বালানি তেল: ভারত তার অপরিশোধিত তেলের ৮৫% এরও বেশি আমদানি করে। রুপি দুর্বল হওয়ার ফলে সরকার এবং সংস্থাগুলিকে এই আমদানিতে বেশি ব্যয় করতে হবে। ফলস্বরূপ:পেট্রোল, এলপিজি, ও রান্নার তেল (ভোজ্যতেল) আরও ব্যয়বহুল হবে।ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী: স্মার্টফোন, ল্যাপটপ, এয়ার কন্ডিশনার, রেফ্রিজারেটর—এইসব পণ্য বৃহৎ পরিসরে উৎপাদিত হলেও, এদের অনেক যন্ত্রাংশ বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। রুপি দুর্বল হওয়ায় এদের দাম বাড়বে।বিদেশি গাড়ি: বৈদ্যুতিক যানবাহন থেকে বিলাসবহুল গাড়ি পর্যন্ত সবকিছুর উপর প্রভাব পড়বে, কারণ যন্ত্রাংশ আমদানিতে খরচ বাড়বে।সোনা ও রুপা: ভারত প্রচুর পরিমাণে সোনা (সুইজারল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত ইত্যাদি থেকে) এবং রুপা (চীন, হংকং, রাশিয়া ইত্যাদি থেকে) আমদানি করে। আমদানি খরচ বাড়লে সোনা ও রুপার গয়নার দামও বৃদ্ধি পাবে।বিদেশে পড়াশোনার খরচ: বিদেশে পড়াশোনা আরও ব্যয়বহুল হবে। যেমন, ৫০,০০০ ডলারের বার্ষিক টিউশন ফি আগের ৪০ লক্ষ টাকা থেকে বেড়ে প্রায় ৪৫ লক্ষ টাকা হয়ে গেছে। শিক্ষা ঋণও ব্যয়বহুল হয়ে উঠবে।টাকার দাম কমার কারণ কী?রুপির পতনের পেছনে কয়েকটি বড় কারণ রয়েছে:ভারত-মার্কিন বাণিজ্য চুক্তির অনিশ্চয়তা: বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা দীর্ঘদিন ধরে স্থগিত থাকায় রুপির উপর চাপ সৃষ্টি হয়েছে।মার্কিন শুল্ক: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারতীয় রপ্তানির উপর ৫০% শুল্ক আরোপ করায় মুদ্রার উপর মারাত্মক প্রভাব পড়েছে।বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অনাস্থা: শক্তিশালী জিডিপি প্রবৃদ্ধি সত্ত্বেও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা (FII) ভারতীয় বাজার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। ২০২৫ সালে এ পর্যন্ত ১৭ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থ বাজার থেকে তুলে নিয়েছে।আরবিআই নীতির পরিবর্তন: আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF) ভারতের বিনিময় হার ব্যবস্থাকে “স্থিতিশীল” থেকে “ক্রল-লাইক”-এ পুনর্বিবেচনা করেছে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy