রাজ্য সরকার কর্তৃক তৈরি করা উচ্চ প্রাথমিকের কর্মশিক্ষা ও শারীরশিক্ষার অতিরিক্ত ১৬০০ শূন্যপদ বাতিল করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু ২০২২ সালে তৈরি করা এই অতিরিক্ত শূন্যপদগুলি বাতিল করার নির্দেশ দেন।
এ দিন, শুনানির সময় আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দেয় যে এই বাতিল পদে আর কোনো নিয়োগ হবে না। আদালতের পর্যবেক্ষণ, ২০১৯ সালে মূল প্যানেলের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ার পর এই অতিরিক্ত শূন্যপদগুলি তৈরি করা হয়েছিল। সেই কারণে এই পদগুলি আইনত বৈধ নয়। বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু তাঁর পর্যবেক্ষণে কড়া মন্তব্য করে বলেন, “মৃত প্যানেলকে ইঞ্জেকশন দিয়ে বাঁচানোর চেষ্টা করা হয়েছে।”
আদালতের বক্তব্য:
আদালত যুক্তি দেয় যে অতিরিক্ত শূন্যপদে নিয়োগ করতে হলে নতুন করে শূন্যপদ ঘোষণা করতে হয় এবং তারপর নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালাতে হয়। আদালত আরও মন্তব্য করে, রাজ্য সরকার তার বিশেষ কার্যনির্বাহী ক্ষমতা (Executive Power) ইচ্ছেমতো ব্যবহার করতে পারে না এবং কারও অধিকার খর্ব করার জন্য এই ক্ষমতা ব্যবহার করা হলে আদালত তা খতিয়ে দেখতেই পারে।
উল্লেখ্য, এই অতিরিক্ত শূন্যপদগুলির মধ্যে কর্মশিক্ষার জন্য ছিল ৭৫০টি এবং শারীরশিক্ষার জন্য ছিল ৮৫০টি। এই শূন্যপদগুলিতে নিয়োগকে ঘিরে দুর্নীতির অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা হয়, যার জেরে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু নিয়োগে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করেন।
আবেদনকারীর আইনজীবী ফিরদৌস শামিম বলেন, “একটা মৃত প্যানেলে অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করে রাজ্য তাদের প্রিয় ক্যান্ডিডেটদের চাকরি দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিল। প্যানেলের মেয়াদ এক বছর। মেয়াদ শেষের পরও পদ তৈরি করে আবার প্যানেলকে বাঁচিয়ে তাঁদের চাকরি দেওয়া আইন সঙ্গত নয়। তাই বিচারপতি এটি খারিজ করে দিয়েছেন। রাজ্য যে সিদ্ধান্ত নেবে তা সংবিধান সম্মত হতে হয়। কিন্তু এটি সংবিধান সম্মত ছিল না।”