২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি সাংসদদের জন্য স্পষ্ট দিকনির্দেশ দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দলের সাংসদদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি সংগঠন, জনসংযোগ এবং আসন্ন নির্বাচন কৌশল নিয়ে বিশদ আলোচনা করেন।
এসআইআর ড্রাইভ নিয়ে কড়া নির্দেশ
রাজ্যে বিশেষ সংশোধনী তালিকা (SIR) প্রক্রিয়া নিয়ে তৃণমূলের অভিযোগের আবহে প্রধানমন্ত্রী মোদী স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, এই ড্রাইভকে কোনোভাবেই জটিল করা যাবে না। এটি হতে হবে “একেবারে সহজ, স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষ।”
এক শীর্ষ সরকারি সূত্রের দাবি অনুযায়ী, মোদী সাংসদদের বলেছেন:
“এসআইআর মানে যোগ্য ভোটারদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা এবং যারা যোগ্য নন, তাঁদের নাম বাদ দেওয়া। এর বাইরে কিছু নয়। বিষয়টি জটিল করবেন না। বার্তাটি কর্মীদের কাছে পৌঁছে দিন।”
সরকার গড়ার টার্গেট ও আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি
প্রধানমন্ত্রী সাংসদদের মনে করিয়ে দেন যে, পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির উত্থান আকস্মিক নয়, বরং সংগঠনগত শক্তির ফল। তিনি উদাহরণ দেন, ২০১১ সালে যেখানে বিজেপির মাত্র তিনজন বিধায়ক ছিলেন, ২০১৬-র মধ্যেই তা বহু গুণ বৃদ্ধি পায়।
মোদী স্পষ্ট করে দেন যে এই ঊর্ধ্বগতি বজায় রাখতে হবে এবং ২০২৬-এর স্পষ্ট লক্ষ্য—রাজ্যে সরকার গঠন করা।
তিনি সাংসদদের বলেন, “বঙ্গের এই নির্বাচন আমাদের জিততেই হবে। কঠোর পরিশ্রম করুন, আত্মবিশ্বাস রাখুন।”
প্রধানমন্ত্রী বিরোধীদের ন্যারেটিভে বিভ্রান্ত না হওয়ার বার্তা দেন।
তিনি বলেন, “মাঠের বাস্তবতা বোঝাই জয়ের চাবিকাঠি।”
রাজনৈতিক হিংসা ও দুর্যোগ নিয়ে উদ্বেগ
বৈঠকে সাংসদরা সম্প্রতি দলের কর্মীদের ওপর হওয়া রাজনৈতিক হিংসা, বিশেষত বিজেপি সাংসদ খাগেন মুর্মুর উপর হামলার ঘটনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে জানান। প্রধানমন্ত্রী জনসংযোগ বাড়িয়ে মানুষের সমস্যা জানার ওপর জোর দেন।
এছাড়াও, দার্জিলিং-এ ভূমিধস পরিস্থিতি নিয়েও মোদী বিস্তারিত খোঁজ নেন বলে জানান বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্ত।
বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তের দাবি, “প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রতিটি বৈঠকই আমাদের নতুন শক্তি দেয়। এই বৈঠক বাংলার জন্য বিশেষ মোটিভেশন।”
২০২৬-এর প্রস্তুতি ও নেতৃত্ব
পশ্চিমবঙ্গে আগামী বছরই বিধানসভা নির্বাচন। চতুর্থবারের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষমতায় ফেরার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিজেপি বড়সড় রোডম্যাপ তৈরি করছে। বৈঠকে সংগঠন, বুথ ম্যানেজমেন্ট এবং ভোটার মোবিলাইজেশন কৌশল নিয়ে আলোচনা হয়।
দলের নির্বাচনী দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন:
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব
ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব
রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর
সুকান্ত মজুমদার