মুর্শিদাবাদের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের লাগাতার আক্রমণাত্মক মন্তব্য ও হুমকির জেরে রাজ্যের রাজনৈতিক পরিবেশ আরও উত্তপ্ত হয়েছে। তাঁর মন্তব্য যদি রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ করে, তবে বিধায়ককে ‘প্রিভেনটিভ অ্যারেস্ট’ (Preventive Arrest) করার নির্দেশ দিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (CV Ananda Bose)। রাজ্যপাল স্পষ্ট জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার ব্যবস্থা না নিলে তিনি নিজে পদক্ষেপ নেবেন।

বাবরি মসজিদ শিলান্যাস ও প্রশাসনের প্রতি ক্ষোভ
উত্তেজনার মূল কারণ ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদের শিলান্যাস ঘিরে হুমায়ুন কবীরের ঘোষণা। বেলডাঙায় এই অনুষ্ঠান করার ঘোষণা দিলেও তিনি অভিযোগ করেন যে, জমি দিতে প্রশাসন অসহযোগিতা করছে। তিনি প্রকাশ্যে অভিযোগ করেন যে, বেলডাঙার এসডিপিও উত্তম গরাই কাজে বাধা দিচ্ছেন এবং ভয় দেখাচ্ছেন।

প্রশাসনকে সরাসরি হুমকি ও হুঁশিয়ারি
প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে একদিন আগেই সাংবাদিকদের সামনে হুমায়ুন কবীর চরম আক্রমণাত্মক মন্তব্য করেন। তিনি বলেন:

“আগুন নিয়ে খেলবেন না। মুর্শিদাবাদের পুলিশ-প্রশাসনকে পরিষ্কার সতর্ক করছি। হুমায়ুন কবীরের সঙ্গে পাঙ্গা নেবেন না। যেদিন কলার ধরব, সেদিন তাকে বাঁচানোর লোক থাকবে না।”

তিনি এখানেই না থেমে প্রশাসনকে সরাসরি আরএসএসের দালাল বলেও কটাক্ষ করে বলেন, “মুসলমান ভোট দিয়ে আপনাদের নির্বাচিত করবে, আর আপনারা আরএসএসের দালালি করবেন?”

জাতীয় সড়ক দখলের হুমকি
হুমায়ুন কবীর ৬ ডিসেম্বর রেজিনগর থেকে বহরমপুর পর্যন্ত জাতীয় সড়ক ‘মুসলিমদের দখলে থাকবে’ বলে প্রকাশ্যে ঘোষণা করেন। তাঁর এই মন্তব্য রাজনৈতিক মহলে তীব্র উত্তেজনা তৈরি করেছে।

রাজ্যপালের কঠোর নির্দেশ
এই পরিস্থিতিতে নড়েচড়ে বসেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তিনি রাজ্য সরকারকে চিঠি দিয়ে পরিষ্কার জানিয়েছেন:

হুমায়ুন কবীরের কথায় বা পদক্ষেপে যদি আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত হয়, তাহলে তাঁকে অবিলম্বে প্রিভেনটিভ অ্যারেস্ট করতে হবে।

যদি রাজ্য সরকার এই বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে রাজ্যপাল নিজে পদক্ষেপ নেবেন।

রাজ্যপালের এই কঠোর নির্দেশে পরিস্থিতির জটিলতা আরও বেড়েছে।

বিজেপি নেতা সজল ঘোষ সরাসরি তৃণমূলকে আক্রমণ করে বলেন, “হুমায়ুন কবীর যা করছেন সেটা অত্যন্ত বিপজ্জনক খেলা। মুসলিম ভোট জড়ো করতে তৃণমূল যে কতটা নিচে নামতে পারে, সেটার বড় উদাহরণ এটা।”