পাকিস্তানে বর্তমানে শীর্ষ সামরিক নেতৃত্বকে ঘিরে এক নজিরবিহীন সাংবিধানিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সঙ্কট তৈরি হয়েছে। কারণ, দেশের প্রথম ফিল্ড মার্শাল হিসেবে অসীম মুনিরকে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর করা এড়াতে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ (Shehbaz Sharif) ইচ্ছাকৃতভাবে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন বলে কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে পাক রাজনীতিতে।
নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ও পাক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বোর্ডের প্রাক্তন সদস্য তিলক দেবেশ সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বর্তমানে বাহারিন এবং লন্ডন সফরে রয়েছেন।
অস্বাভাবিক পরিস্থিতি: সেনাপ্রধানহীন পাকিস্তান
শাহবাজ শরিফের এই অসময়ে বিদেশ সফর পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর জন্য এক অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। তিলক দেবেশের মতে, পাক সেনা প্রধান হিসেবে অসীম মুনিরকে পাঁচ বছরের মেয়াদে চিফ ডিফেন্স স্টাফ (CDF) হিসেবে নিয়োগ করার কথা। কিন্তু শাহবাজ শরিফ সরাসরি এই নিয়োগ এড়ানোর জন্যই দেশ ছেড়েছেন। ফলে, সাংবিধানিক ও অপারেশনাল নোটিফিকেশন জারি না হওয়ায় দেশটি বর্তমানে সেনা প্রধানহীন অবস্থায় রয়েছে।
ঝুলে আছে নিউক্লিয়ার অথরিটির ভাগ্য
পাকিস্তানের জন্য এটি একটি অত্যন্ত বিপজ্জনক পরিস্থিতি। কারণ, শুধু সেনাপ্রধানের পদই শূন্য নয়, নিউক্লিয়ার কমান্ড অথরিটি (Nuclear Command Authority) যাকে নতুন স্ট্র্যাটেজিক ফোর্সেস কমান্ডের অধীনে রাখার কথা ছিল, সেই বিষয়টি নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
পাক সংশোধিত সংবিধানের বিধান অনুযায়ী, সেনা প্রধানের মেয়াদ চিফ ডিফেন্স স্টাফের (CDF) মেয়াদের সমান—অর্থাৎ পাঁচ বছর ধরা হয়। যদিও অসীম মুনিরের বর্তমান মেয়াদ সবে তিন বছর পূর্ণ হয়েছে, তাই তাঁর মেয়াদ বাকি আরও দুই বছর।
আইনি বিতর্ক ও ডিমিং ধারা
যদিও নতুন বিজ্ঞপ্তির প্রয়োজন আছে কিনা, তা নিয়ে পাক আইন বিশেষজ্ঞদের মধ্যে সন্দেহ রয়েছে। পাক সংবাদ মাধ্যম ‘ডন’-এর দাবি অনুযায়ী, ২০০৪ সালের পাকিস্তানি সেনা সংশোধনীয় আইনে একটি ‘ডিমিং ধারা’ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা আগে থেকেই কার্যকর ছিল। এই ডিমিং ধারার কারণে মুনিরের মেয়াদ পাঁচ বছর বাড়ানো যেতে পারে বলে পাক বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশ মনে করছে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আদালত ও পাক সরকারের ওপরই নির্ভর করছে।