ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং সম্প্রতি এক বিতর্কিত মন্তব্য করে দেশের রাজনীতিতে নতুন করে ঝড় তুলেছেন। সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের ১৫০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি দাবি করেন যে, দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু বাবরি মসজিদ নির্মাণের জন্য সরকারি তহবিল ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন।
রাজনাথ সিংয়ের দাবি, সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলই ছিলেন সেই নেতা, যিনি নেহরুর এই “বাবরি পরিকল্পনা” প্রতিহত করেছিলেন। মন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, প্যাটেল নিশ্চিত করেছিলেন যে সরকারি অর্থ মসজিদ নির্মাণে ব্যবহার হবে না।
হিন্দু-বিরোধী ছিল কংগ্রেস?
একই অনুষ্ঠানে বিজেপির মুখপাত্র সি.আর. কেশবনও ডঃ রাজেন্দ্র প্রসাদের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বক্তব্য রাখেন এবং অভিযোগ করেন যে কংগ্রেস পার্টির ইতিহাসে “হিন্দু বিরোধী মানসিকতা” ছিল। কেশবনের বক্তব্য অনুযায়ী, নেহরু সোমনাথ মন্দিরের পুনর্নির্মাণের বিরোধিতা করেছিলেন এবং সেই সময় সরকার রাষ্ট্রপতি রাজেন্দ্র প্রসাদের বক্তৃতা ব্ল্যাক আউট করেছিল। তিনি বলেন, “কংগ্রেস সবসময় হিন্দু সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের বিরোধী ছিল। প্যাটেল ছিলেন সেই নেতা যিনি দেশের ঐতিহ্য রক্ষায় কাজ করেছেন।”
এই বক্তব্যের মাধ্যমে বিজেপি নেতৃত্ব কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ধর্মনিরপেক্ষতার (সেক্যুলারিজম) নীতি এবং ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়ে তীক্ষ্ণ আক্রমণ শানিয়েছেন। বাবরি মসজিদ ও সোমনাথ মন্দিরের ইতিহাস ভারতের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্কের বিষয়।
কংগ্রেসের কড়া জবাব
রাজনাথ সিংয়ের এই দাবিকে কংগ্রেস নেতারা ‘ভিত্তিহীন’ বলে অভিহিত করেছেন। কংগ্রেসের মুখপাত্ররা বলেছেন, এ ধরনের ইতিহাস পুনঃলিখনের চেষ্টা সম্পূর্ণরূপে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তারা অভিযোগ করেন যে বাবরি মসজিদ ও সোমনাথ মন্দিরের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যে কোনও বিতর্ক মূলত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়েছে। এই বিতর্কিত দাবির মাধ্যমে স্বাধীন ভারতের দুই গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক নেতা—নেহরু ও প্যাটেলকে আবারও মুখোমুখি দাঁড় করানো হলো।