আগামিকাল, বৃহস্পতিবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ভারত সফরের (Putin India Tour) ঠিক আগে দিল্লিতে কর্মরত তিন ইউরোপীয় দেশের রাষ্ট্রদূতের ভূমিকা নিয়ে চরম ক্ষুব্ধ ভারত সরকার। ব্রিটেনের লিন্ডি ক্যামেরন, ফ্রান্সের থিয়েরি মাথাউ এবং জার্মানির ফিলিপ একারম্যান – এই তিন দেশের রাষ্ট্রদূত একটি প্রথম সারির ইংরেজি সংবাদপত্রে যৌথ নিবন্ধ লিখে রুশ প্রেসিডেন্টকে “নির্ দয় ব্যক্তি” বলে কঠোর সমালোচনা করেছেন। ইউক্রেন যুদ্ধে শত শত মানুষ হত্যার দায়ও চাপিয়েছেন পুতিনের উপর।
নয়াদিল্লির ক্ষোভের কারণ: ২৩তম ভারত-রাশিয়া বার্ষিক সম্মেলন যৌথভাবে উদ্বোধন করতে আসছেন পুতিন ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক কার্যক্রমের ঠিক আগে, ভারতের দীর্ঘদিনের বন্ধু রাষ্ট্র এবং কৌশলগত অংশীদার রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে এমন কঠোর নিন্দা দিল্লির কর্তাদের কাছে অত্যন্ত বিরক্তিকর এবং অস্বস্তিকর। কূটনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা, পুতিনের নিন্দা করে লেখা এই নিবন্ধের মাধ্যমে মূলত ভারতকেই বার্তা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে—ভারত এমন একজন রাষ্ট্রপ্রধানকে স্বাগত জানাচ্ছে, যাঁর হাতে ইউক্রেনের মানুষের রক্ত লেগে আছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের ‘চাপ’: ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকেও ভারত-রাশিয়া মৈত্রীর সম্পর্ক বজায় আছে। ভারত যখন স্বল্প মূল্যে রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল কিনছে, তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন তাতে জোরালো আপত্তি তুলেছে। এমনকী রাশিয়ার তেল পরিশোধন করে ভারত যাতে অন্য দেশে বিক্রি না করতে পারে, সেজন্য নিষেধাজ্ঞা জারির চেষ্টা করেছে তারা। এই পরিস্থিতিতে ব্রিটিশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশের রাষ্ট্রদূতদের যৌথ নিবন্ধকে দিল্লি তাদের উপর চাপ সৃষ্টির চেষ্টা হিসেবে দেখছে।
ভারতের বিদেশ মন্ত্রক এখনও স্পষ্ট করেনি যে ওই তিন রাষ্ট্রদূতকে কিছু বলা হবে কিনা, তবে ঘনিষ্ঠ সূত্রে খবর, এই ঘটনায় মস্কো কঠোর প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে। নয়া দিল্লির কর্তারা ইঙ্গিত দিয়েছেন, পরবর্তী কূটনৈতিক আলোচনায় সংশ্লিষ্ট দেশগুলির কাছে ভারত তাদের তীব্র বিরক্তির কথা জানাবে। ভারতের কাছে স্বাধীনতা পূর্ববর্তী সময় থেকে চলে আসা রাশিয়া ঘনিষ্ঠতা আজও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।