ত্রিকোণ প্রেমের জটিলতার জেরে এক যুবককে সারা রাত আম বাগানে আটকে অমানবিক মারধর ও নির্যাতনের পর গায়ে মুত্রত্যাগের মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্তরা নিজেরাই সেই ঘটনার ছবি তুলে সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করেন, যা ঝড়ের গতিতে ছড়িয়ে পড়তেই জনমনে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
ঘটনাটি জেঠিয়ার জোনপুর এলাকার। রবীন্দ্রনগর এলাকার এক যুবককে তুলে নিয়ে গিয়ে আমবাগানে আটকে রেখে এই পাশবিক অত্যাচার চালানো হয়।
পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভ ও জামিনের বিতর্ক:
অভিযোগের ভিত্তিতে জেঠিয়া থানার পুলিশ অভিযুক্ত শুভ্রনীল এবং জিৎ নামে ওই দু’জনকে গ্রেফতারও করে। কিন্তু বিতর্কের শুরু এরপরই। অভিযোগ, জেঠিয়া থানার পুলিশ লঘু মামলা (Weak Sections) দেওয়ায় অভিযুক্তরা দ্রুত জামিনও পেয়ে যান। এতে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য থেকে শুরু করে নৈহাটির শাসক দলের বিধায়ক সনত দে।
বিধায়ক সনত দে বলেন, “পুলিশ গ্রেফতার করেছে, কিন্তু এমন সেকশনে পাঠিয়েছে, যে বেলও হয়ে গিয়েছে তাঁদের। ত্রিকোণ প্রেম হয়েছে, বারে গিয়ে আগে মদ খেয়েছে, তারপর আটকে রেখে মারধর করা, প্রস্রাব করে দেওয়া—কিছু বলার ভাষা নেই। আমি ওসি-র সঙ্গে কথা বলেছি। সেকশন অ্যাড করে চরম শাস্তির দাবি জানিয়েছি। এই অপরাধের কোনও ক্ষমা নেই। ভিডিয়ো আমি দেখেছি, মারাত্মক দৃশ্য।” পুলিশের উচ্চতর কর্তৃপক্ষের কাছেও তিনি বিষয়টি জানিয়েছেন।
কিছুদিন আগে খড়দহের বিধায়ক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ও পুলিশের বিরুদ্ধে দুষ্কৃতীদের দালালি করার অভিযোগ তুলেছিলেন। এবার পুলিশের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ শাসকদলের আরও এক বিধায়ক।
ঠিক কী ঘটেছিল?
আক্রান্তের বয়ান অনুযায়ী, এলাকার এক যুবতীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল, কিন্তু সেই সম্পর্কে অবনতি হওয়ায় তিনি সরে আসেন। অভিযোগ, এরপরই ওই যুবতীর প্রাক্তন প্রেমিক তাঁর ওপর চড়াও হন। শুভ্রনীল এবং জিৎ তাঁকে বারে বারে প্রাণনাশের হুমকি দেন। এরপর তাঁকে ডেকে নিয়ে রবীন্দ্রপল্লির কাছে আম বাগানে নিয়ে সারা রাত বেধড়ক মারধর করেন। রক্তাক্ত অবস্থায় কোনোক্রমে পালিয়ে বাঁচেন তিনি।
বিজেপির মহিলা মোর্চার রাজ্য সভাপতি ফাল্গুনী পাত্র এই ঘটনায় পুলিশকে আক্রমণ করে বলেন, “পুলিশের নিস্ক্রিয়তার জন্যই দুষ্কৃতীদের এই বাড়-বাড়ন্ত। পুলিশ লঘু মামলা দায়ের করে আদালতে জামিন পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করিয়ে দিয়েছে।”