সিদ্ধারামাইয়া বনাম ডিকে শিবকুমার, কর্ণাটকে মুখ্যমন্ত্রীর পদে টানাপোড়েন তুঙ্গে! তিন বছর পর ডিকে-কে চেয়ার দিতে কংগ্রেস হাইকমান্ডের ‘বিশেষ প্ল্যান’

কর্ণাটক কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী পদ নিয়ে সিদ্ধারামাইয়া এবং ডিকে শিবকুমারের মধ্যে চলমান টানাপোড়েন তুঙ্গে। সূত্রের খবর, ১০০-র বেশি বিধায়ক এখনও সিদ্ধারামাইয়ার পক্ষে রয়েছেন, যদিও ডিকে শিবকুমার লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেস হাইকমান্ড বিষয়টি সুরাহা করার জন্য একাধিক পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে।

হাইকমান্ডের ‘রফা সূত্র’ প্ল্যান:

বলা হচ্ছে, আপাতত মুখ্যমন্ত্রী পদ সিদ্ধারামাইয়ার কাছেই থাকতে পারে। তবে হাইকমান্ডের পরিকল্পনা হলো, সিদ্ধারামাইয়ার সঙ্গে কথা বলে তাঁকে এই শর্তে রাজি করানো যে, ৩ বছর পর অথবা তিনি যদি বেশি সময় ধরে চেয়ারে থাকার দাবি করেন, তবে ৪ বছর পর ডিকে শিবকুমারকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ দেওয়া হবে।

এই কৌশলের উদ্দেশ্য হলো: ১. সিদ্ধারামাইয়া যেন হাসিমুখে পরের কংগ্রেস সরকার গড়ার কাজে জোর দেন। ২. ডিকে শিবকুমার যেন পরবর্তীতে পুরো ৫ বছরের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন। ৩. বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে সিদ্ধারামাইয়ার নাতিকে বিধায়ক বানিয়ে মন্ত্রিসভায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতে পারে। ৮০ বছর পেরোনো সিদ্ধারামাইয়ার তাঁর নাতির প্রতি বিশেষ দুর্বলতা রয়েছে।

ডিকে-র পুরোনো দাবি:

সূত্রের খবর অনুযায়ী, নির্বাচনের ঠিক আগে এই বিবাদ থামাতে হাইকমান্ডের সামনে সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে, সরকার গঠনের পর প্রথমে সিদ্ধারামাইয়া মুখ্যমন্ত্রী হবেন এবং আড়াই বছর পর ডিকে শিবকুমারকে চেয়ার দেওয়া হবে। আড়াই বছর পর্যন্ত ডিকে শিবকুমার একাই উপ-মুখ্যমন্ত্রী এবং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি থাকবেন। আড়াই বছরের সময়সীমা ঘনিয়ে আসতেই ডিকে তাঁর দাবি হাইকমান্ডের কাছে তুলে ধরেছেন।

হাইকমান্ডের সমস্যা:

কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে জানিয়েছেন যে, এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত রাহুল, সোনিয়া এবং তিনি নিজে মিলে নেবেন। হাইকমান্ডের সামনে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো:

বিজেপি-র শক্তি মোকাবিলা করার জন্য সিদ্ধারামাইয়ার মতো বড় মাপের মাস লিডার এবং কুরুবা সমাজের সবচেয়ে বড় নেতার প্রয়োজন।

অন্যদিকে, ডিকে শিবকুমারের মতো দক্ষ ম্যানেজার, পরিশ্রমী এবং বিশ্বস্ত নেতার অসন্তোষও তারা ডেকে আনতে চায় না।

ডিকে-র দুর্বলতা ও দেরির কারণ:

সিদ্ধারামাইয়ার বয়স ৮০ বছর হলেও, ডিকে শিবকুমারের বয়স মাত্র ৬৩। তবে লোকসভা নির্বাচনে ডিকে শিবকুমারের সাংসদ ভাই ডিকে সুরেশের হার ডিকে-কে কিছুটা দুর্বল করেছে। তাছাড়া, বিধায়কদের সংখ্যায় সিদ্ধারামাইয়া অনেকটাই এগিয়ে। ডিকে ভোক্কালিগা সমাজের নেতা হলেও, দেবগৌড়া পরিবারের মতো তিনিও এই সমাজের একক সর্ববৃহৎ নেতা নন। এছাড়াও, ডিকে-র বিরুদ্ধে ইডি (ED)-এর মামলাও চলমান রয়েছে।

এই সব দিক বিবেচনা করে হাইকমান্ড নেতৃত্ব পরিবর্তন নিয়ে তাড়াহুড়ো না করে ঠান্ডা মাথায় সিদ্ধান্ত নিতে চাইছে। এই বিলম্বের কারণেই কর্ণাটকের নেতাদের মধ্যে অস্থিরতা বাড়ছে। সোনিয়া গান্ধী বিদেশ থেকে ফেরার পরই চূড়ান্ত বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy