অযোধ্যার রাম মন্দিরের নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। আগামী কাল, মঙ্গলবার, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সম্পূর্ণ হওয়া সেই মন্দিরের চূড়ায় ঐতিহাসিক ‘ধ্বজা’ (নিশানা) ওড়াবেন। এই অনুষ্ঠান ঘিরে এখন অযোধ্যা জুড়ে সাজসাজ রব। ২০২৪ সালের ২২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, তবে তখনও মন্দিরের কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। প্রায় দুই বছর পর, কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পর আগামীকাল তার প্রকাশ্য ঘোষণা হবে।
মন্দিরের গঠন: মন্দিরের একতলায় থাকবে রামলালার মূর্তি এবং দু’তলায় থাকবে রাম দরবার।
ধ্বজা ও দণ্ড: ১৬১ ফুট উঁচু মন্দিরের চূড়ায় যে ধ্বজা বসানো হবে, সেটি লম্বায় ২২ ফুট এবং চওড়ায় ১১ ফুট। যে দণ্ডটিতে ধ্বজা লাগানো হবে, সেটির উচ্চতা ৪২ ফুট।
পূজাপাঠ শুরু: ধ্বজা উত্তোলন ঘিরে গত বৃহস্পতিবার থেকেই বিশেষ পূজাপাঠ শুরু হয়ে গেছে।
রাজনৈতিক বিতর্ক: এই অনুষ্ঠান এমন এক সময়ে হচ্ছে, যখন ২০২৬ সালে পশ্চিমবঙ্গ, অসম, কেরল, তামিলনাড়ু-সহ ৫ রাজ্যে বিধানসভা ভোট রয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, এই সময়টি বেছে নেওয়ার পিছনে রাজনৈতিক কারণ রয়েছে। আবার মঙ্গলবার যখন মোদী অযোধ্যায় ধ্বজা তুলবেন, ঠিক সেইদিনই এসআইআর (SIR)-এর প্রতিবাদে মতুয়া-অধ্যুষিত ঠাকুরনগরে তৃণমূলের মেগা-কর্মসূচি রয়েছে।
বিজেপির হার: বিরোধীরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন যে, ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের মুখে রাম মন্দিরের উদ্বোধন করেও বিজেপি যে লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত, সেই ফৈজাবাদ আসনেই হেরে গিয়েছিল। তবে বিজেপি এই কটাক্ষে গুরুত্ব দিতে নারাজ।
রাম মন্দির চত্বরকে একদিকে যেমন কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে, তেমনি ফুল দিয়ে সাজানো হচ্ছে চারপাশ। ফুল শিল্পী রাহুল কুমার জানিয়েছেন, সাজসজ্জার জন্য কলকাতা এবং ব্যাঙ্গালোর থেকেও ফুল আনা হয়েছে। মঙ্গলবারের অনুষ্ঠান উপলক্ষে পর্যটকদের সংখ্যাও বিপুলভাবে বাড়ছে।
দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে অযোধ্যার বিতর্কিত জমি নিয়ে আইনি লড়াই চলেছিল। মুসলিমদের পক্ষ নিয়ে যিনি দীর্ঘদিন এই লড়াই চালিয়েছিলেন, সেই ইকবাল আনসারিও এখন রাম মন্দির নির্মাণকে সমর্থন জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “এটা ধর্মের নগর। এখানে সব ধর্মের মানুষই সম্মান করে।” এর আগের বারের মতো মঙ্গলবারের অনুষ্ঠানেও তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে এবং তিনি সেখানে উপস্থিত থাকবেন বলে নিশ্চিত করেছেন।