দুই দিনের ভুটান সফর শেষ করে দেশে ফিরেই রাজধানীতে ঘটে যাওয়া লালকেল্লার কাছে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় তৎপর হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বুধবার বিকেলে তিনি সরাসরি লোকনায়ক জয়প্রকাশ নারায়ণ হাসপাতালে (LNJP) যান এবং আহতদের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর এক্সবার্তায় তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, “এই চক্রান্তের পিছনে যারা জড়িত, তারা কেউ পার পাবে না।” প্রধানমন্ত্রী নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।
এদিন বিকেল সাড়ে ৫টায় নিরাপত্তা সংক্রান্ত ক্যাবিনেট কমিটির (CCS) জরুরি বৈঠক ডেকেছেন প্রধানমন্ত্রী। যেখানে তিনি পৌরোহিত্য করবেন।
বিস্ফোরণে ১২ জনের মৃত্যু, গ্রেপ্তার ডাক্তার-সহ ৮
সোমবার সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিট নাগাদ লালকেল্লার কাছে যানজটপূর্ণ এলাকায় একটি সাদা রঙের হুন্ডাই আই২০ গাড়িতে হওয়া ভয়াবহ বিস্ফোরণে মুহূর্তের মধ্যে আগুন লেগে যায় এবং কমপক্ষে ১২ জন নিহত ও ২০ জনেরও বেশি আহত হন।
তবে এই বিস্ফোরণের কয়েক ঘণ্টা আগেই বড় সাফল্য পায় দেশের নিরাপত্তা সংস্থাগুলি। তারা প্রায় ২,৯০০ কেজি বিস্ফোরক উদ্ধার করে এবং ৩ জন ডাক্তার-সহ ৮ জনকে গ্রেপ্তার করে। তদন্তে জানা গেছে, এই চক্রটি পাকিস্তানভিত্তিক জইশ-ই-মহম্মদ (JeM) এবং আনসার গজওয়াত-উল-হিন্দের সঙ্গে যুক্ত একটি “হোয়াইট-কলার” সন্ত্রাস মডিউল।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ফরিদাবাদের আল ফালাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত ড. মুজাম্মিল গনাই এবং ড. শাহীনের সাইয়েদও রয়েছেন। ওই বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই প্রায় ৩৬০ কেজি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট উদ্ধার করা হয়েছে। বিস্ফোরণের সময় গাড়িটি চালাচ্ছিলেন ড. উমর নবি, যিনি আল ফালাহ বিশ্ববিদ্যালয়েরই সহকর্মী ছিলেন এবং ধারণা করা হচ্ছে তিনি বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন।
টার্গেট ছিল দীপাবলি ও প্রজাতন্ত্র দিবস
তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, ধৃত মুজাম্মিল ও উমর বিস্ফোরণের আগে লালকেল্লা এলাকার রেকি করেছিলেন। তাদের মূল পরিকল্পনা ছিল দীপাবলির ভিড়ে বড় হামলা চালানোর, যা ব্যর্থ হওয়ায় পরবর্তী টার্গেট ছিল প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠান। হামলায় ব্যবহৃত গাড়িতে ANFO, অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট ও জ্বালানি তেলের মিশ্রণজাত উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন বিস্ফোরক ভর্তি ছিল। প্রাথমিক তথ্যে এটিকে ম্যানুয়াল ডিটোনেটরের মাধ্যমে সক্রিয় করা একটি আত্মঘাতী হামলা বলে মনে করা হচ্ছে।
এই নতুন ধরনের “হোয়াইট-কলার” সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের ইঙ্গিত পাওয়ায় ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (NIA) এবং দিল্লি পুলিশের বিশেষ সেল যৌথভাবে তদন্ত শুরু করেছে।