জীবিত থেকেও ভোটার তালিকায় ‘মৃত’! কমিশনের চরম ভুলে দুশ্চিন্তায় মালদার ভ্যানচালক

২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ভোট দেওয়া সত্ত্বেও মাত্র এক বছর পরই ভোটার তালিকা থেকে ‘মৃত’ হিসাবে বাদ পড়েছেন মালদা জেলার এক ব্যক্তি। চাঁচল ১ নম্বর ব্লকের থানাপাড়ার বাসিন্দা, ৫১ বছর বয়সী ভ্যানচালক শ্যামল দাসের ভোটার তালিকায় নামের পাশে লেখা রয়েছে ‘ডিলিটেড’। অথচ, তাঁর প্রয়াত বাবা নীরেন দাসের নাম এখনও বহাল তবিয়তে তালিকায় রয়ে গিয়েছে।

জীবিত ভোটারের নাম বাদ, বাবার নাম বহাল!

রাজ্যে যখন স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন (SIR) বা ভোটার তালিকা সংশোধনের বিশেষ প্রক্রিয়া চলছে, ঠিক তখনই নিজের নাম তালিকা থেকে মুছে যাওয়ায় প্রবল দুশ্চিন্তায় পড়েছেন শ্যামল দাস। ১৮ বছর বয়স থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত প্রতিটি নির্বাচনে অংশ নেওয়া এই ব্যক্তি সরকারি আধিকারিকদের দায়িত্বহীনতাকেই এর জন্য দায়ী করেছেন।

শ্যামল দাস বলেন,

“৩-৪ দিন আগে পাড়ারই একজন আমাকে জানায়, ভোটার তালিকা থেকে আমার নাম নাকি বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি চব্বিশেও ভোট দিয়েছি। তখন কোনও সমস্যা হয়নি। আমার বাবা কিছুদিন আগে মারা গিয়েছেন। হয়তো বাবার নাম কাটতে গিয়ে তালিকা থেকে আমার নাম কেটে দেওয়া হয়েছে। সরকারি কর্মীদের ভুলের কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে। আমি চাই আমার নাম দ্রুত তালিকায় তুলে দেওয়া হোক।”

এদিকে এলাকার বাসিন্দা প্রসেনজিৎ শর্মাও প্রশাসনিক কর্তাদের কাছে দ্রুত তাঁর নাম তালিকায় তোলার অনুরোধ করেছেন।রাজনৈতিক চাপান-উতোর চরমেএই খবর চাউর হতেই বিষয়টি নিয়ে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে শুরু হয়েছে তীব্র রাজনৈতিক চাপান-উতোর।

দলনেতার বক্তব্যঅভিযোগ তৃণমূল (ATM রফিকুল হোসেন, জেলা পরিষদ)”কেন্দ্রীয় সরকার তড়িঘড়ি করে এসআইআর করতে চলেছে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যা জানিয়েছেন, সেটাই বাস্তবায়িত হচ্ছে। এক বছরের মধ্যে কীভাবে তাঁর নাম তালিকা থেকে বাদ যায়? সুতরাং ভোটার তালিকা নিয়ে যে ভুয়ো কাজকর্ম চলছে, তা পরিষ্কার। আমরা এর বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে আদালতে যাব।”কেন্দ্রীয় সরকার এসআইআর-এর নামে নির্বাচন কমিশনকে ব্যবহার করে চক্রান্ত করছে।

বিজেপি (অভিষেক সিংহানিয়া, সাধারণ সম্পাদক)”ভোটার তালিকায় কারচুপি, গরমিল করা তৃণমূলের কাজ। এভাবেই ওরা জিতছে। বিশেষ এক সম্প্রদায় অধ্যুষিত এলাকায় বেছে বেছে ওই সম্প্রদায়ের নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে। এটাই তৃণমূলের ষড়যন্ত্র।”তৃণমূল কারচুপি করছে এবং ইচ্ছে করে জীবিত ভোটারের নাম বাদ দিচ্ছে।

নিজের নাম তালিকা থেকে বাদ পড়ায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে শ্যামল দাস ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দায়ের করেছেন, তবে এখনও কমিশনের তরফ থেকে তাঁকে কিছু জানানো হয়নি।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy