চিনের পর এবার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনুসের বিরুদ্ধে ভারতের মানচিত্র বিকৃতির গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। গত সপ্তাহে ঢাকায় পাকিস্তানি জেনারেলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় ইউনুসের উপহার দেওয়া একটি বইয়ের প্রচ্ছদে বিতর্কিত মানচিত্রটি ধরা পড়েছে, যেখানে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাতটি রাজ্যকে বাংলাদেশের অংশ হিসেবে দেখানো হয়েছে। এই ঘটনা ঘিরে দুই পড়শি দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত গত সপ্তাহের শেষে, যখন পাকিস্তানের জয়েন্ট চিফ অফ স্টাফ কমিটির চেয়ারপার্সন জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জা ঢাকায় এসে মহম্মদ ইউনুসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
বিকৃত মানচিত্রের ছবি ভাইরাল
রবিবার ইউনুস নিজেই পাকিস্তানি জেনারেলের সঙ্গে সাক্ষাতের ছবি এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেন। একটি ছবিতে দেখা যায়, ইউনুস পাক জেনারেল মির্জাকে ‘আর্ট অফ ট্রায়াম্ফ’ নামের একটি বই উপহার দিচ্ছেন। এই বইয়ের প্রচ্ছদের ছবিটিতেই ভারত-বাংলাদেশ মানচিত্রের বিকৃত রূপ ধরা পড়েছে।
এই মানচিত্রে ভারতের সাতটি উত্তর-পূর্বের রাজ্য—যেমন আসাম ও অন্যান্য রাজ্যগুলিকে—বাংলাদেশের সম্পত্তি হিসেবে দেখানো হয়েছে। কট্টরপন্থী ইসলামিদের দীর্ঘদিনের ‘গ্রেটার বাংলাদেশ’-এর বিকৃত চিত্ররূপ এটি। এই পোস্টের পরই সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র ক্ষোভ ও ধিক্কার উঠেছে। ভারতের সার্বভৌমত্ব নিয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ছিনিমিনি খেলছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
পাকিস্তান-বাংলাদেশ সম্পর্কের মোড়বদল
দীর্ঘ ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ থেকেই বাংলাদেশ-পাকিস্তানের সম্পর্ক তিক্ত ছিল। কিন্তু শেখ হাসিনার পতন এবং নতুন অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে সেই সম্পর্ক দ্রুত মধুর হতে শুরু করেছে।
মহম্মদ ইউনুস ক্ষমতায় আসার পর পাকিস্তানকে ফের ‘সুহৃদ’ হিসেবে বরণ করে নিচ্ছেন এবং পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর জন্য ঢাকার দরজা খুলে দিয়েছেন। এ কারণেই পাক সেনার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জেনারেলের ঢাকায় উপস্থিতি নিয়ে ভারতের চরম মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জেনারেল মির্জা দুই দেশের সীমান্ত এলাকা শিলিগুড়ি করিডর বা ‘চিকেন নেক’ (মোরগকণ্ঠ) দেখতে যাবেন বলেও খবর রয়েছে।
তবে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ভারতের বিদেশ মন্ত্রক সোমবার সকাল পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি।