লতাজি-শাহরুখের অপেক্ষার পরেও স্টুডিওতে দেরি উদিত নারায়ণের! DDLJ-এর গান তৈরির অজানা কাহিনি জানুন

‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে’ (DDLJ)—শুধুমাত্র একটি সিনেমা নয়, ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে এটি এক চিরস্থায়ী আইকনিক প্রেমের গল্প। ১৯৯৫ সালের ২০ অক্টোবর মুক্তি পাওয়া এই রোমান্টিক ড্রামাটি আজ ৩০ বছরের সফর পূর্ণ করল। সময়ের সাথে সাথে সিনেমাটির কাহিনি, বিশেষ করে অমরীশ পুরীর সেই আইকনিক সংলাপ “জা সিমরন জা, জিলে আপনি জিন্দেগী…” আজও দর্শকদের নস্টালজিক করে তোলে।

‘ডিডিএলজে’-র সাফল্যের অন্যতম কারণ হলো এর ব্লকবাস্টার সাউন্ডট্র্যাক। সঙ্গীত রচয়িতা জুটি যতীন-ললিত-এর সুর এবং আনন্দ বক্সীর লেখা গান সেই বছর বলিউডের সবচেয়ে বেশি রেকর্ড করা গান ছিল। ‘তুঝে দেখা তো’, ‘মেহেন্দি লগা রে রাখনা’ অথবা ‘হো গয়া হ্যায় তুঝকো তো প্যায়ার সজনা’—প্রতিটি গানই ২০০৫ সালে বিবিসি এশিয়ান নেটওয়ার্ক ভোটার্সের টপ তালিকায় ছিল।

সুরকার ললিত পণ্ডিত তাঁর সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে এই নস্ট্যালজিয়ায় গা ভাসিয়েছেন। তিনি বলেন, “ডিডিএলজে আমাদের জনপ্রিয়তা ও খ্যাতিকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যায়। লতাজির গান, বক্সী সাহেবের লেখা আর যশরাজ ব্যানারে প্রথমবার কাজ, সব মিলিয়ে অসাধারণ এক অভিজ্ঞতা।”

পণ্ডিতজি আরও জানান, ছবি মুক্তির আগেই তাঁরা জানতেন, “যদি আমাদের ক্যারিয়ারে বড় কিছু করতে হয়, তাহলে এটাই সেই মুহূর্ত।” এই গানের জন্য তাঁরা চার-পাঁচ মাস অক্লান্ত পরিশ্রম করেছিলেন।

ললিত পণ্ডিত স্মৃতিচারণ করে বলেন, সাধারণত যশ চোপড়ার বাড়িতে গানের আসর বসত, যেখানে যশজি, লতা মঙ্গেশকরজি ও আশা ভোঁসলেজি-সহ পুরো পরিবার উপস্থিত থাকত। বড় বড় লেজেন্ডরা সামনে বসে গানের টুকিটাকি সংশোধন করতেন।

কুমার শানুর স্মৃতি: কুমার শানুর (Kumar Sanu) কাছে ডিডিএলজে তাঁর ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় অর্জন। তিনি বলেন, “এত গায়কের মধ্যে আদিত্য আমাকে বেছে নিয়েছিলেন, এটা অনেক বড় ব্যাপার ছিল। লতাজির সঙ্গে ‘তুঝে দেখা তো’ রোমান্টিক ডুয়েট গাওয়া আমাকে অনেক উৎসাহিত করেছিল। কে জানত যে এই গানটি একটি মাইলস্টোন হয়ে উঠবে!”

উদিত নারায়ণের অপেক্ষা: উদিত নারায়ণের (Udit Narayan) কণ্ঠে শোনা যায় ‘মেহেন্দি লাগাকে রাখ না’, ‘হো গায়া হ্যায় তুঝকো’ এবং ‘রুক জা’ গান। উদিত জানান, ‘রুক জা ও দিল দিওয়ানে’ গানটি রেকর্ডের সময় তিনি চার ঘণ্টারও বেশি দেরিতে স্টুডিয়োতে পৌঁছান, যে কারণে শাহরুখ খান তাঁর জন্য অপেক্ষা করে চলে গিয়েছিলেন। তবে গানটি রেকর্ড হওয়ার পর সকলেই মুগ্ধ হন এবং সমস্ত অভিযোগ ভুলে যান।

ললিত পণ্ডিত এই গানের সাফল্যের জন্য এর অরজিনালিটি এবং অসাধারণ এনার্জি লেভেলকে ক্রেডিট দেন। তাঁর মতে, এটি একটি মাস্টারপিস, যা আর কোনোদিন তৈরি করা যাবে না। “আসলে, মাঝে মাঝে কিছু ম্যাজিক হয়ে যায়।”

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy