পাকিস্তানের করাচি জেলে বন্দি দুই বাঙালি মৎস্যজীবী, দুই বছর ধরে ছেলের ফেরার অপেক্ষায় মা-বাবা!

দু’বছর ধরে পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের দুই তরুণ মৎস্যজীবী—লাল্টু দাস ও সুজয় দাস। উত্তর ২৪ পরগনার মাটিয়া থানার মমিনপুর গ্রামের বাসিন্দা এই দুই যুবকের পরিবার আজ বুকভরা কান্না আর একটাই আর্তি নিয়ে অপেক্ষা করছে, “জীবিত অবস্থায় ঘরের ছেলে যেন ঘরে ফিরুক।”

মাছ ধরতে গিয়ে ভুলবশত জলসীমা অতিক্রম করার কারণেই তাঁদের এই করুণ পরিণতি। মৎস্যজীবী পরিবারটির দু’বছর ধরে একটাই প্রার্থনা—’ঘরের ছেলে কি আর ঘরে ফিরবে?’

কীভাবে বন্দি হলেন লাল্টু ও সুজয়?
জানা গিয়েছে, ২০২৩ সালে লাল্টু দাস ও সুজয় দাস কেরলের একটি ট্রলারে মাছ ধরার কাজে যুক্ত ছিলেন। সেখান থেকে তাঁরা গুজরাত উপকূলে মাছ ধরার কাজে যান। রাতের অন্ধকারে জলসীমা সঠিকভাবে বোঝা সম্ভব হয়নি। মাছ ধরতে ধরতে ভুলবশত ভারতীয় ট্রলারটি পাকিস্তানের জলসীমায় ঢুকে পড়ে।

এরপরই পাকিস্তানের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হাতে ধরা পড়েন লাল্টু ও সুজয়। সেই থেকে প্রায় দু’বছর ধরে তাঁরা পাকিস্তানের করাচি জেলে বন্দি রয়েছেন।

আট মাস ধরে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ
পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শেষবার প্রায় আট মাস আগে পাকিস্তানের জেল থেকে ভিডিও কলে লাল্টু আর সুজয়ের সঙ্গে কথা হয়েছিল। এরপর থেকে আর কোনও যোগাযোগই নেই। বন্দি থাকার প্রথমদিকে চিঠি আদান-প্রদান হলেও, এখন সেটাও বন্ধ।

উদ্বিগ্ন পরিবার স্থানীয়ভাবে বসিরহাট ও মাটিয়া থানায় যোগাযোগ করেছে। তাঁদের বক্তব্য, “দিল্লি পুলিশও কিছুদিন আগে এসেছিল, তথ্য নিয়ে গিয়েছিল, কিন্তু তারপর আর কিছুই জানানো হয়নি।”

পরিবারের একমাত্র রোজগেরে ছেলে দু’জনের ফিরে আসার আশায় মা-বাবা ও পরিবারের সদস্যরা আজও প্রতিদিন খোলা আকাশের দিকে তাকিয়ে আছেন। তাঁরা আশা করেন, একদিন হয়তো খবর আসবে, লাল্টু ও সুজয় ফিরে এসেছেন তাঁদের আপন দেশে, নিজেদের ঘরে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy