এখানে কৃষ্ণমন্ত্রে হয় কালীর আরাধনা! আসানসোলের শ্রীপীঠম মন্দিরে কালীপুজোর বিশেষত্ব জানলে অবাক হবেন

আর হাতে গোনা কয়েকটা দিন। তারপরেই আসছে দীপান্বিতা অমাবস্যা। আলোর রোশনাই, প্রদীপ আর মোমবাতির সাজের পাশাপাশি এই সময় ভক্তদের ভিড় জমে প্রাচীন ও জাগ্রত মন্দিরগুলিতে। তেমনই একটি জাগ্রত কালীমন্দির রয়েছে আসানসোলে— কালী পাহাড়ি ডিভিসি মোড় এলাকার শ্রীপীঠম মন্দির।

প্রায় ৩০ বছর আগে পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর থেকে এই মূর্তি এনে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল আসানসোলের শ্রীপীঠম-এ। সেই থেকে এখানে মা কালীকে বিভিন্ন উপাচারে ও নিষ্ঠার সঙ্গে পুজো করা হয়।

তিনটি উপাচারে মায়ের আরাধনা
শ্রীপীঠম মন্দিরে মা কালীকে তিনটি উপাচারে পুজো করা হয়, যা এই মন্দিরের অন্যতম বিশেষত্ব:

১. শাক্ত: শক্তি বা কালীর প্রচলিত রূপে। ২. বৈষ্ণব: বৈষ্ণব মতে কৃষ্ণমন্ত্র বা গুরুদেবের দেওয়া মন্ত্রে আরাধনা হয়। ৩. পরমহংস: যা সন্ন্যাসী বা ত্যাগের সর্বোচ্চ ভাব।

মন্দিরের সাধক অনির্বানন্দ গিরি মহারাজ বলেন, “এখানে মায়ের পূজার্চ্চনা করা হয় গুরুদেবের দেওয়া মন্ত্র দিয়ে, কোনো পুঁথির মন্ত্র উচ্চারিত হয় না। এই কারণেই এখানে মা কালীকে বিমলা ও কমলা রূপে পুজো করা হয়।”

ভূত চতুর্দশী ও দীপান্বিতা অমাবস্যার ভোগ
দীপান্বিতা অমাবস্যায় এখানে বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয়। ভক্তরা ভিড় করেন মায়ের কাছে মনস্কামনা পূর্ণ করতে।

ভূত চতুর্দশী: এই দিন নিকটবর্তী নদীর একটি ফাঁকা স্থানে (গ্রাম বাংলায় জোর নামে পরিচিত) মা কালীকে আমন্ত্রণ জানাতে যেতে হয়। সেই সঙ্গে এদিন ১৪ রকমের অন্নর ভোগ নিবেদন করা হয়।

অমাবস্যার ভোগ: দীপান্বিতা অমাবস্যার দিন রাত্রিতে আট রকমের অন্নর ভোগ নিবেদন করা হয়।

অন্যান্য ভোগ: মায়ের চতুর্দশী পুজোর দিন সংস্কারিক পুজো হয়ে যাওয়ার পর অন্ন ভোগ, মিষ্টান্ন, মুরকি, বড় সাইজের কদমা বাতাসা, টানার নাড়ু এবং দেশি চিনি ভোগ নিবেদন করা হয়।

মন্দিরের প্রবেশদ্বারে সবসময় একটি অখন্ড প্রদীপ ও একটি অখন্ড ধুনী জ্বালানো থাকে, যা মায়ের জাগ্রত উপস্থিতির প্রতীক। দীপান্বিতা অমাবস্যার তিথিতে চাইলে আপনিও এই জাগ্রত মন্দিরে এসে মায়ের আশীর্বাদ নিতে পারেন।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy