মহারাষ্ট্রের বনমন্ত্রী গণেশ নায়েক সম্প্রতি এক চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি দিয়ে নতুন করে রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। তিনি জানান, মন্ত্রী হওয়ার আগে তিনি তাঁর বাড়িতে একটি হরিণ এবং চিতাবাঘের বাচ্চা পুষতেন।
ভাসির বিষ্ণুদাস ভাবে নাট্যগৃহ-তে রাজ্য মুসলিম খাতিক সমাজ দ্বারা আয়োজিত একটি কমিউনিটি সমাবেশে বক্তব্য রাখার সময় নায়েক অকপটে উল্লেখ করেন যে, বনমন্ত্রী হওয়ার পর তাঁকে এই প্রাণীগুলিকে ছেড়ে দিতে হয়েছিল। তিনি স্বীকার করেন যে, ভারতীয় আইন অনুসারে বন্যপ্রাণী ব্যক্তিগত অধিকারে রাখা যায় না। ওয়াইল্ড লাইফ প্রটেকশন অ্যাক্ট (Wildlife Protection Act) অনুযায়ী, লাইসেন্স ছাড়া বন্যপ্রাণী রাখা বা প্রজনন করা একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
আইন প্রণেতারাই কি আইন ভাঙছেন?
নায়েকের এই মন্তব্য কেবল পরিবেশবিদদের নয়, রাজনৈতিক মহলেও ভ্রু কুঁচকে দিয়েছে। অনেকে এই বিষয়টিকে মন্ত্রীর বিরল সততার মুহূর্ত হিসেবে দেখলেও, সমালোচকদের মতে, এটি আইন প্রণেতাদের নিজেদের তদারকি করা আইন সম্পর্কে গভীর উদাসীনতাকেই তুলে ধরে। এই মন্তব্যটি গণেশ নায়েকের প্রকৃতির সঙ্গে ব্যক্তিগত সংযোগের প্রতিফলন হলেও, একই সাথে বন ও বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত নিয়মাবলী পালনের ক্ষেত্রে তাঁর অতীত কার্যকলাপের উপর প্রশ্ন তুলেছে।
নভি মুম্বাই এবং থানে অঞ্চলে গণেশ নায়েক একজন প্রবীণ নেতা হিসেবে তাঁর জনভিত্তি এবং দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক প্রভাবের জন্য পরিচিত। তবে তাঁর সাম্প্রতিক মন্তব্য এমন সময়ে এলো, যখন থানে জেলার রাজনৈতিক পরিস্থিতি এমনিতেই উত্তপ্ত। রাজ্য স্তরের মিত্র থাকা সত্ত্বেও, এই গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তারের জন্য বিজেপি এবং শিবসেনা একে অপরের সঙ্গে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিস বারবার উভয় দলের নেতাদের সংযম বজায় রাখার এবং আসন্ন স্থানীয় নির্বাচনের আগে ঐক্যের উপর জোর দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
এই পরিস্থিতিতে, নায়েকের বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত মন্তব্যটি প্রতীকী তাৎপর্য অর্জন করেছে—এটি দেখায় যে, বিজেপি-শিবসেনা জোট যখন থানেতে একটি ঐক্যবদ্ধ ফ্রন্ট উপস্থাপনের জন্য সংগ্রাম করছে, তখনও গণেশ নায়েকের মতো প্রভাবশালী স্থানীয় নেতারা দলীয় লাইন থেকে স্বাধীনভাবে কাজ করার প্রবণতা দেখাচ্ছেন।