আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধে ‘শেষ পর্যন্ত লড়ার’ ঘোষণা করল চীন। একই সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ১০০% শুল্কের হুমকির পাল্টা জবাব হিসেবে মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) থেকেই সব আমেরিকান মালিকানাধীন ও পরিচালিত জাহাজের উপর ‘বিশেষ পোর্ট ফি’ বসানো শুরু করেছে বেইজিং। বিশ্বজুড়ে আর্থিক বাজারকে নাড়িয়ে দিয়েছে এই পদক্ষেপ।
বিরল মৃত্তিকা (Rare Earths) সহ কৌশলগত রফতানি নিয়ন্ত্রণের ঘোষণা করার পর চীনকে চাপে ফেলতে ট্রাম্প চীনা পণ্যের উপর ১০০% শুল্কের হুমকি দেন। এর জবাবে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রকের এক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মুখপাত্র কড়া বার্তা দেন। তিনি বলেন, “শুল্ক যুদ্ধ এবং বাণিজ্য যুদ্ধের বিষয়ে চীনের অবস্থান সঙ্গতিপূর্ণ। আপনারা লড়তে চাইলে, আমরা শেষ পর্যন্ত লড়ব; আপনারা আলোচনা চাইলে, আমাদের দরজা খোলা।” তিনি আরও যোগ করেন, আমেরিকা একযোগে আলোচনার চেষ্টা এবং নতুন বিধিনিষেধ আরোপের হুমকি দিতে পারে না।
মার্কিন জাহাজে ‘বিশেষ পোর্ট ফি’
চীনের পরিবহন মন্ত্রক ঘোষণা করেছে যে তারা মঙ্গলবার থেকেই মার্কিন সংস্থা, সংগঠন ও ব্যক্তিদের মালিকানাধীন বা পরিচালিত জাহাজগুলির উপর বিশেষ পোর্ট ফি নেওয়া শুরু করেছে। চীনা শিপিং শিল্পের স্বার্থ রক্ষা করাই এই পদক্ষেপের লক্ষ্য। চীনের বন্দরগুলিতে ভেড়া মার্কিন জাহাজগুলির জন্য এই ফি প্রাথমিকভাবে প্রতি নেট টনে ৪০০ ইউয়ান (প্রায় $৫৬.৩০) ধার্য করা হয়েছে, যা আগামী তিন বছর ধরে প্রতি এপ্রিল মাসে বৃদ্ধি পাবে। এই ফি দিতে ব্যর্থ হলে জাহাজের আমদানি-রফতানি প্রক্রিয়া আটকে দেওয়া হবে। তবে চীন নির্মিত জাহাজগুলি এই শুল্ক থেকে ছাড় পাবে।
ট্রাম্পের হঠাৎ ভোলবদল!
নভেম্বর ১ তারিখ থেকে চীনা আমদানিতে ১০০% শুল্ক এবং গুরুত্বপূর্ণ সফটওয়্যারের উপর রফতানি নিয়ন্ত্রণের হুমকি দেওয়ার পরও সোমবার ট্রাম্পের সুর নরম হয়। ট্রুথ সোশ্যাল-এ পোস্টে তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চীনকে ‘আঘাত নয়, বরং সাহায্য করতে চায়’। তিনি প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে ‘খুব শ্রদ্ধেয়’ বলে উল্লেখ করেন এবং জানান যে তিনি চীনকে অর্থনৈতিক মন্দার দিকে ঠেলে দিতে চান না। এই নরম সুরের কারণে এই মাসের শেষে দক্ষিণ কোরিয়ায় ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং শি জিনপিংয়ের মধ্যে সম্ভাব্য বৈঠক নিয়েও নতুন করে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।