আবারও বিতর্কের শিরোনামে বোলপুর থানা এবং থানার আইসি লিটন হালদার। অনুব্রত মণ্ডলের সেই বহুল আলোচিত ভাইরাল অডিও কাণ্ডের পর বালি মাফিয়াদের সঙ্গে যোগসাজশ এবং তোলাবাজির অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। এবার অভিযোগ আরও গুরুতর – বোলপুর থানার পুলিশ জোর করে বালি বোঝাই গাড়ি আটকে রেখে বেআইনিভাবে টাকা তুলছে। এই ঘটনায় গাড়িচালক ও মালিকরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে বোলপুরের রবীন্দ্রবীথি বাইপাস মোড়ের কাছে। চারটি বালি বোঝাই গাড়িকে বেআইনিভাবে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে বোলপুর থানার পুলিশের বিরুদ্ধে। গাড়িচালক ও মালিকদের দাবি, তাঁরা পূর্ব বর্ধমান থেকে ৭০০ সেফটি বালি লোড করে কেউ মালদা, আবার কেউ নদীয়ার উদ্দেশে যাচ্ছিলেন। বোলপুরের উপর দিয়ে যাওয়ার সময় রবীন্দ্রবীথি বাইপাসের উপরই বোলপুর থানার পুলিশ তাঁদের গাড়িগুলিকে থামায়।
গাড়িচালকরা জানান, তাঁদের কাছে বালির চালান থেকে শুরু করে যেখানে বালি ওজন করা হয়েছে, সেখানকার কাগজ পর্যন্ত সমস্ত বৈধ নথি ছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও পুলিশ জোর করে গাড়িগুলিকে আটকে রাখে বলে অভিযোগ।
গাড়ি মালিকরা বুঝতে পারছেন না, কেন তাঁদের গাড়ি আটকে রাখা হয়েছে। তাঁদের অভিযোগের তীর সরাসরি বোলপুর থানার দিকে: “বোলপুর থানার পুলিশ এইভাবেই টাকা তুলছে।” তাঁদের মতে, পুলিশ ইচ্ছে করে গাড়ির ছাড়পত্রের সময়সীমা পার করিয়ে দেবে, কারণ বালির চালানের একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ থাকে। সেই মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে চালান অবৈধ হয়ে যাবে এবং তখন পুলিশ মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে গাড়িগুলিকে ছেড়ে দেবে।
গাড়ি মালিকদের প্রশ্ন, তাঁদের কাছে সমস্ত বৈধ কাগজ থাকা সত্ত্বেও কেন তাঁরা ব্যবসা করতে পারবেন না? এটা কি আইনের নামে এক নতুন ধরনের তোলাবাজি, যা সাধারণ ব্যবসায়ীদের পথে বসাচ্ছে?
এই ঘটনায় জেলা পুলিশ সুপার শ্রী আমনদীপের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সংক্ষিপ্তভাবে বলেন, “বিষয়টি দেখছি।” তাঁর এই আশ্বাসবাণী সত্ত্বেও বোলপুর থানার ভাবমূর্তি নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।
আগেও যে আইসি লিটন হালদারের বিরুদ্ধে বালি পাচারকারীদের সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগ উঠেছিল, এই নতুন ঘটনা সেই অভিযোগকে আরও জোরালো করেছে। প্রশাসন কি এবার এই বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে দেখবে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে, নাকি আবারও এই ধরনের ঘটনা চাপা পড়ে যাবে—সেটাই এখন দেখার। বালি ব্যবসায়ীরা ন্যায়বিচারের আশায় পথ চেয়ে আছেন।
