ডায়রিয়া হলে স্যালাইন খেতে হয়—এ কথা মোটামুটি সবাই জানেন। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে শরীর জল ও লবণ হারায়। খাওয়ার স্যালাইন সেই জল -লবণের ঘাটতি পূরণ করে। কিন্তু উচ্চ র’ক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের রোগীরা অনেক সময় এই খাওয়ার স্যালাইন খাবেন কি না তা নিয়ে বিভ্রান্তিতে পড়েন।
কেননা তাঁদের লবণ কম খেতে চিকিৎসকেরা পরামর্শ দিয়ে থাকেন। পাশাপাশি গ্লুকোজ বা চিনি খেতেও নিষেধ করেন। কিন্তু খাওয়ার স্যালাইনের প্যাকেটে তো লবণ ও গ্লুকোজের মিশ্রণ থাকে! তাহলে?
খাওয়ার স্যালাইনে জল , সোডিয়াম, পটাশিয়াম ও গ্লুকোজ বা শর্করা থাকে। এখানে গ্লুকোজের প্রধান কাজ, অন্ত্রে লবণ শোষণে সাহায্য করা। প্রতি লিটার খাওয়ার স্যালাইনে গ্লুকোজের পরিমাণ ২০ গ্রামের বেশি নয় এবং এর প্রায় পুরোটাই অন্ত্রে লবণ শোষণে ব্যবহৃত হয়ে যায়। তাই ডায়রিয়ায় স্যালাইন খেলে ডায়াবেটিসের রোগীর র’ক্তে শর্করা বাড়বে—এমন ধারণা ঠিক নয়।
এ ক্ষেত্রে স্যালাইন মূলত লবণের ঘাটতি পূরণ করার কাজে ভূমিকা রাখে। শরীরের স্বাভাবিক কাজকর্ম বজায় রাখতে লবণের ভারসাম্য রক্ষা করাটা খুবই জরুরি। আর ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে আমরা প্রচুর লবণ হারাই। তাই উচ্চ র’ক্তচাপের রোগীরও ডায়রিয়া হলে স্যালাইন খেতে হবে, এতে লবণের আধিক্য হবে না বা র’ক্তচাপও বাড়বে না।
ডায়রিয়া হলে স্যালাইন খাওয়ার মাধ্যমে জল -লবণের ঘাটতি দ্রুত পূরণ না করলে শরীর জল শূন্য হয়ে পড়বে, লবণের অভাবে নিস্তেজ হয়ে পড়বে। জল শূন্যতা থেকে কিডনি অকার্যকারিতাও হতে পারে। যেসব ডায়াবেটিস ও উচ্চ র’ক্তচাপের রোগীর আগে থেকেই কিডনিতে সামান্য সমস্যা আছে, ডায়রিয়ায় তাঁদের আরও বেশি জটিলতা হতে পারে। তাই ডায়রিয়া হলে সবাইকেই স্যালাইন খেতে হবে। এ নিয়ে কোনো দ্বিধা-দ্বন্দ্বের অবকাশ নেই। ডায়াবেটিসের রোগীরা সেই সঙ্গে বারবার র’ক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করে দেখবেন ও উচ্চ র’ক্তচাপের রোগীরা র’ক্তচাপ মাপবেন।