রবিবার রাতে রাজস্থানের জয়পুর শহরের লোহারমাণ্ডি রোডে এক ভয়াবহ দুর্ঘটনায় অন্তত ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ৫০ জনেরও বেশি মানুষ গুরুতর আহত হয়েছেন। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের প্রাথমিক অনুমান, মদ্যপ অবস্থায় থাকা একটি ডাম্পার ট্রাকের বেপরোয়া গতির কারণেই এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে।
🚛 ৫ কিলোমিটার জুড়ে ‘মৃত্যুর মিছিল’
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার গভীর রাতে দ্রুত গতিতে আসা একটি ডাম্পার ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। এর পর প্রায় ৫ কিলোমিটার রাস্তা জুড়ে এটি তাণ্ডব চালায়। এই সময় উল্টো দিক থেকে আসা একাধিক গাড়ি, মোটরবাইক এবং পথচারীদের ধাক্কা মারে ট্রাকটি।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান অনুযায়ী, চালক সম্পূর্ণভাবে নেশগ্রস্ত অবস্থায় ছিলেন। একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান,
“ট্রাকটা একটা পর একটা গাড়িকে ধাক্কা মারতে মারতে যাচ্ছিল। মানুষ চিৎকার করছিল, গাড়িগুলো উলটে যাচ্ছিল, কিন্তু চালক যেন কিছুই বুঝছিল না।”
অবশেষে একটি ভয়াবহ সংঘর্ষের পর ট্রাকটি রাস্তার পাশে গিয়ে থামে। ততক্ষণে লোহারমাণ্ডি রোড পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে, দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া গাড়ির স্তূপ ও আহত মানুষের আর্তনাদে ভরে ওঠে এলাকা।
🤕 ঘটনাস্থল থেকে আটক চালক, চলছে রক্তের নমুনা পরীক্ষা
দুর্ঘটনার খবর পাওয়ামাত্রই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ ও উদ্ধারকারী দল। ট্রাকের নিচে এবং দুমড়ে যাওয়া গাড়ির ধ্বংসস্তূপের মধ্যে থেকে বহু মানুষকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়। পুলিশ জানিয়েছে, আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থাই আশঙ্কাজনক। নিহতদের পরিচয় নিশ্চিত করার প্রক্রিয়া চলছে।
পুলিশ ঘটনাস্থল থেকেই ট্রাকচালককে আটক করেছে। তাঁর রক্তে মদ্যপানের প্রমাণ যাচাইয়ের জন্য নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে।
💔 ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দ্বিতীয় বড় দুর্ঘটনা, শোকস্তব্ধ রাজস্থান
এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার মাত্র একদিন আগেই রাজস্থানের ফলৌদিতে আরও একটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছিল। সেখানে একটি ট্রাভেলার রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রেলারে ধাক্কা মারলে অন্তত ১৫ জন তীর্থযাত্রীর মৃত্যু হয়েছিল। এই যাত্রীরা যোধপুরের সুরসাগর এলাকার বাসিন্দা ছিলেন এবং মন্দির থেকে প্রার্থনা সেরে ফিরছিলেন।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ভজনলাল শর্মা জয়পুরের এই মর্মান্তিক ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন, নিহতদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে এবং আহতদের যেন সবরকমের দ্রুত ও সঠিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়।