বলা হয় বর্ষাকালের সঙ্গে পিঁপড়ার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। শুধু বর্ষা কেন, বছরের অন্য সময়ও পিঁপড়ার উৎপাতে অতিষ্ঠ হয় না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। করোনার এই আবহে ঘরবাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, খাবার-দাবারের দিকে লক্ষ্য রাখাটাই জরুরি। কিন্তু পিঁপড়ার উৎপাতে তা পারাটাই বড় কষ্টের।
কিছু কিছু পিঁপড়া আছে যা মানুষকে কামড়ায়। কিছু আছে কাঠ পিঁপড়া, এরা ক্ষতি করে বাড়ি-ঘরের। এদিকে খাবারে সংক্রমণের অন্যতম কারিগরও পিঁপড়া। তাই পিঁপড়া থেকে খাবারে সংক্রমণের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। কারণ খাবারে কোনও সংক্রমণ মানে পেটের সমস্যা। এমিনতেই বর্ষার সময় ডায়ারিয়া আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ে।
ডাইনিং টেবিলে খাবার রেখেছেন, কিছুক্ষণ পর এসে দেখলেন সেই খাবারে পিঁপড়া জড়িয়ে আছে। এছাড়া সবাই রান্নাঘরে খাবার রাখেন সেখানেও ঘটে পিঁপড়ার উৎপাত। আর এই পিঁপড়ার উৎপাতে অনেকেই অতিষ্ঠ। কীভাবে মিলবে এর থেকে রেহাই?
তবে আতঙ্ক নয়, পিঁপড়া থেকে নিষ্কৃতি মিলতে পারে বেশ কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি মানলেই। এবার তা জেনে নিন…
লেবু
বাড়ির যে অংশ দিয়ে পিঁপড়া আসছে, বাড়ির বারান্দা, প্রবেশপথ, রান্নাঘরের দেওয়াল কিংবা মেঝেতে পাতি লেবুর খোসা রেখে দেওয়া যায়। একইভাবে লেবুর রসও দিয়ে রাখলে পিঁপড়ার উপদ্রব কমবে। লেবুর গন্ধ পিঁপড়াদের ঘোরতর অপছন্দ। তাই রান্নাঘরের স্ল্যাবে লেবু রেখে দিলেও ফল মিলবে। তবে সেই লেবুতে যেন কিছুতেই লবণ-চিনি না লাগে, তাহলে কিন্তু উপদ্রব বাড়বে।
কমলা লেবু
সারাবছরই বাজারে কমবেশি কমলা লেবু পাওয়া যায়। এই লেবুর খোসা এবং গরম পানি দিয়ে একটা ক্বাথ তৈরি করে সেটি পিঁপড়া ঢোকার রাস্তায়, রান্নাঘরের স্ল্যাবে দিয়ে রাখলে কমবে এর উৎপাত।
গোলমরিচ
পিঁপড়াদের দু’চোখের বিষ এই মশলা। পানির সঙ্গে গোলমরিচের গুঁড়া মিশিয়ে স্প্রে করা যেতে পারে বাড়ির বারান্দা, প্রবেশপথ, রান্নাঘরের দেওয়াল কিংবা মেঝেতে। তাহলেও কমবে পিঁপড়ার আনাগোনা।
সাদা ভিনিগার
সাদা ভিনিগারের গন্ধ মোটেও সহ্য করতে পারে না পিঁপড়া। পানি এবং সাদা ভিনিগার মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করে সেটি দিয়ে রাখতে হবে পিঁপড়া ঢোকার প্রবেশপথগুলোতে।
দারচিনি-লবঙ্গ-তেজপাতা
প্রাকৃতিক বিকর্ষকের কাজ করে এই মশলাগুলো। পিঁপড়ারা মোটেও এগুলোর গন্ধ পছন্দ করে না। এগুলো একত্রে গরম করে গুঁড়া করে নিয়ে অল্প পরিমাণে ছড়িয়ে রাখলে পিঁপড়া পালাতে বাধ্য।
পুদিনা পাতা
এই পাতার কড়া গন্ধ আছে। সামান্য থেতো করে এই পাতা রান্নাঘর ও মেঝের কোণের অংশগুলোতে দিয়ে রাখা যেতে পারে। এছাড়া পুদিনা তেল পানির সঙ্গে মিশিয়ে ঘরে স্প্রে করলেও পিঁপড়ার হাত থেকে রেহাই মিলবে।
চক
ক্যালসিয়াম কার্বনেটের চক গুঁড়া করে রান্নাঘর কিংবা দেওয়ালে যেখানে পিঁপড়ার আনাগোনা সেখানে দিতে হবে। অথবা চকের দাগ কেটেও রাখা যেতে পারে। ক্যালসিয়াম কার্বনেটের গন্ধে পিঁপড়ার উৎপাত কমতে পারে।
এছাড়া বাজারে বেশ কিছু স্প্রে পাওয়া যায়, যেগুলোতে পিঁপড়া জব্দ হয়। তবে অনেক ক্ষেত্রেই খুব বেশিক্ষণ সময় এগুলো কাজ করে না। তাই উপরোক্ত ঘরোয়া পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে। তাতেই পিঁড়ার উৎপাত থেকে মিলবে রেহাই।