সুস্থ পাকস্থলী আমাদের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রোবায়োটিক ও খাদ্যআঁশ সমৃদ্ধ খাবার যেমন পাকস্থলীর কার্যকারিতা স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে, তেমনই কিছু খাবার রয়েছে যা পাকস্থলীতে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। এই ক্ষতিকর খাবারগুলো হজমে ব্যাঘাত ঘটায়, ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি করে এবং প্রদাহ সৃষ্টি করে। তাই সুস্থ থাকতে এই খাবারগুলো খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দেওয়া বা যথাসম্ভব কম খাওয়ার চেষ্টা করা উচিত।
১. শর্করা জাতীয় খাবার (সাদা কার্ব):
শর্করা বা কার্বোহাইড্রেটকে সাধারণত ভালো কার্ব ও খারাপ কার্ব এই দুই ভাগে ভাগ করা হয়। তবে অতিরিক্ত শর্করা জাতীয় খাবার গ্রহণ করলে পাকস্থলীর ফ্লোরার ভারসাম্য নষ্ট হয় এবং প্রদাহ তৈরি হতে পারে। সাদা ভাত, পাস্তা, বিস্কুট ও পাউরুটির মতো খাবারগুলো এই খারাপ শর্করার অন্তর্ভুক্ত।
২. অস্বাস্থ্যকর ফ্যাট:
তিন ধরনের ডায়েটারি ফ্যাট পেটে মেদ এবং শরীরে প্রদাহ সৃষ্টির জন্য দায়ী। এগুলো হলো ট্রান্স ফ্যাট, স্যাচুরেটেড ফ্যাট ও ওমেগা-৬ ফ্যাট। প্যাকেটজাত খাবার, উচ্চ ফ্যাটযুক্ত মাংস, ফুল ফ্যাট দুগ্ধজাত খাবার এবং কর্ন অয়েল ও সয়াবিন অয়েলের মতো তেল অস্বাস্থ্যকর ফ্যাটের উৎস।
৩. তেলে ভাজা খাবার:
যেকোনো তেলে ভাজা খাবারই পাকস্থলীর উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে এবং অ্যাসিড রিফ্লাক্স ও বুক জ্বালাপোড়ার মতো সমস্যা তৈরি করতে পারে। প্রক্রিয়াজাত খাবারের মতোই তেলে ভাজা খাবার তলপেটের চর্বি বাড়ায় এবং হজম হতে বেশি সময় নেয়।
৪. কোমল পানীয়:
কোমল পানীয় স্বাস্থ্যের জন্য সবসময়ই ক্ষতিকর, এবং পাকস্থলীর জন্য এর প্রভাব আরও বেশি নেতিবাচক। কোমল পানীয়তে থাকা উচ্চমাত্রার চিনি ও কৃত্রিম ফ্লেভার পাকস্থলীর ব্যাকটেরিয়ার স্বাভাবিক উপস্থিতিকে ব্যাহত করে।
৫. লবণাক্ত খাবার:
লবণাক্ত খাবার বলতে মূলত অতিরিক্ত লবণযুক্ত স্ন্যাকস জাতীয় খাবারকে বোঝানো হয়। অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ পাকস্থলীর জন্য ক্ষতিকর। চিপস বা চানাচুরের মতো খাবারে প্রচুর পরিমাণে লবণ ও হাইড্রোজেনেটেড তেল থাকে। হাইড্রোজেনেটেড তেল হলো এক প্রকার ক্ষতিকর ফ্যাট। লবণ ও এই ক্ষতিকর ফ্যাট পাকস্থলীর স্বাভাবিক কার্যকারিতাকে ব্যাহত করে।
৬. সম্পূর্ণ ফ্যাট-ফ্রি খাবার:
অনেকেই মনে করেন ফ্যাট-ফ্রি খাবার স্বাস্থ্য ও পাকস্থলীর জন্য ভালো। তবে বাস্তবতা ভিন্ন। ফ্যাট-ফ্রি খাবারে প্রায়শই উচ্চমাত্রার কৃত্রিম প্রিজারভেটিভ ও কেমিক্যাল মেশানো থাকে। এগুলো হজম হতে বেশি সময় নেয় এবং সহজে পরিপাক হতে চায় না। ফলে বদহজমের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
সুস্থ পাকস্থলীর জন্য এই খাবারগুলো পরিহার করা বা কম পরিমাণে গ্রহণ করাই বুদ্ধিমানের কাজ। এর পরিবর্তে প্রোবায়োটিক ও খাদ্যআঁশ সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করে আপনার পাকস্থলীর স্বাস্থ্যকে সুরক্ষিত রাখতে পারেন।