ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য জরুরি বার্তা: রক্তে শর্করার পরিমাণ হঠাৎ কমে গেলে কী করবেন?

ডায়াবেটিসে আক্রান্ত বহু মানুষই নিয়মিত ওষুধ খাওয়ার পরেও হঠাৎ করে রক্তে শর্করার অস্বাভাবিক হ্রাসের সম্মুখীন হন। রক্তে শর্করার পরিমাণ যেমন মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে যাওয়া বিপজ্জনক, তেমনই অত্যাধিক কমে যাওয়াও স্বাস্থ্য হানিকর।

রক্তে শর্করার এই বিপজ্জনক মাত্রায় নেমে যাওয়াকে চিকিৎসা পরিভাষায় ‘হাইপোগ্লাইসেমিয়া’ বলা হয়। এই পরিস্থিতিতে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে রোগীর হৃদরোগ সহ একাধিক জটিলতা দেখা দিতে পারে, এমনকি কোমাতেও চলে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে।

তাই ডায়াবেটিস রোগীদের নিয়মিতভাবে তাদের রক্তে শর্করার মাত্রা পর্যবেক্ষণ করা অত্যন্ত জরুরি। রক্তে শর্করার পরিমাণ ৭০ ইউনিট বা তার নীচে নেমে গেলেই অবিলম্বে সতর্ক হতে হবে।

শরীরে শর্করার মাত্রা কমে যাওয়ার প্রাথমিক লক্ষণ:

শরীরে শর্করার মাত্রা কমে গেলে কিছু প্রাথমিক লক্ষণ দেখা যায়, যা দ্রুত শনাক্ত করা গেলে বিপদ এড়ানো সম্ভব। লক্ষণগুলো হলো:

হাত-পা কাঁপা
শীত শীত অনুভব করা
হৃৎস্পন্দনের গতি বেড়ে যাওয়া
অতিরিক্ত খিদে লাগা
বমি বমি ভাব
শ্বাসকষ্ট হওয়া
রাতে দুঃস্বপ্ন দেখা এবং
দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাওয়া।
রক্তে শর্করার মাত্রা কমে গেলে দ্রুত যা করবেন:

রক্তে শর্করার মাত্রা কমে গেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া অপরিহার্য। এক্ষেত্রে ‘আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশন’ একটি সহজ নিয়ম মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছে, যা ‘১৫-১৫’ নিয়ম নামে পরিচিত। নিয়মটি হলো:

১. যদি রক্তে শর্করার মাত্রা ৭০ ইউনিটের নীচে নেমে যায়, তাহলে দ্রুত ১৫ গ্রাম মিষ্টি জাতীয় খাবার (যেমন মধু, চকলেট, গ্লুকোজ) গ্রহণ করুন। এমন খাবার বেছে নিতে হবে যা খুব তাড়াতাড়ি রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে।

২. মিষ্টি খাবার খাওয়ার পর ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন।

৩. পনেরো মিনিট পর পুনরায় রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করুন।

৪. যদি দেখেন শর্করার মাত্রা ৭০ ইউনিটের উপরে উঠেছে, তাহলে চিন্তার কিছু নেই। তবে যদি দেখেন এখনও ৭০ ইউনিটের নীচে রয়েছে, তাহলে আরও ১৫ গ্রাম মিষ্টি খাবার খেয়ে পুনরায় ১৫ মিনিট অপেক্ষা করে আবার পরীক্ষা করুন।

তবে সবসময় এই পদ্ধতি কার্যকর নাও হতে পারে। যদি রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত না বাড়ে বা রোগী অচেতন হয়ে যায়, তাহলে কালবিলম্ব না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং প্রয়োজনে রোগীকে নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যান। ডায়াবেটিস রোগীদের নিজেদের স্বাস্থ্যের প্রতি আরও বেশি যত্নশীল হওয়া এবং নিয়মিত রক্তে শর্করার মাত্রা পর্যবেক্ষণ করা উচিত।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy