ব্যায়ামের কথা শুনলেই যাদের চোখ কপালে ওঠে, দৌড়ানো বা হাঁটাহাঁটির ভয়ে যারা কাতর, তাদের জন্য সাইকেল হতে পারে এক দারুণ বিকল্প। ছোটবেলা থেকে সাইকেল চালানোর স্মৃতি কম-বেশি সকলেরই রয়েছে। শুধু আনন্দ নয়, নিয়মিত সাইকেল চালানো শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটি একদিকে যেমন শরীরচর্চা, তেমনই অন্যদিকে বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি দিতে পারে। ওজন কমানো থেকে শুরু করে হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতেও সাইকেল চালানোর জুড়ি মেলা ভার। আসুন, জেনে নেওয়া যাক নিয়মিত সাইকেল চালানোর কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা:
অবসাদ থেকে মুক্তি: আধুনিক জীবনে অবসাদ একটি সাধারণ সমস্যা। যারা এই সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্য সাইকেল চালানো হতে পারে এক দারুণ দাওয়াই। নিয়মিত সাইকেল চালালে শরীর থেকে এন্ডোরফিনস ও অ্যাড্রেনালিন নামক হরমোন নিঃসৃত হয়। এই হরমোনগুলি মনকে প্রফুল্ল রাখে এবং আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়াও, সাইকেল চালানোর সময় মনোযোগ ধরে রাখার প্রয়োজন হয়, যা মনঃসংযোগ বৃদ্ধিতে সহায়ক।
গভীর ঘুম: অনিদ্রা একটি কষ্টকর সমস্যা। গবেষণা বলছে, যারা নিয়মিত সাইকেল চালান, তাদের শারীরিক উদ্বেগ অনেকাংশে কমে যায়। ফলে রাতে আসে শান্তির ঘুম। তবে খাওয়ার পরপরই সাইকেল চালানো উচিত নয়। সকালে ঘুম থেকে উঠে হালকা কিছু খেয়ে সাইকেল চালানো স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
ওজন হ্রাস: ওজন কমাতে অনেকেই বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করেন। তাদের জন্য সাইকেল চালানো একটি সহজ ও কার্যকর উপায় হতে পারে। বদ্ধ জায়গায় বা ছাদে ঘোরার চেয়ে খোলা রাস্তায় সাইকেল চালানো অনেক বেশি ফলদায়ক। বিশেষ করে ভোরের নির্মল বাতাসে সাইকেল চালালে মন ও শরীর দুটোই সতেজ থাকে। এক ঘণ্টা মাঝারি গতিতে সাইকেল চালালে প্রায় ৫০০ ক্যালোরি পর্যন্ত ঝরানো সম্ভব। তবে সাইকেল চালানোর সময় অবশ্যই চারপাশে খেয়াল রাখতে হবে, তাই হেডফোন ব্যবহার করা উচিত নয়।
ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি: সাইকেল চালানোর সময় শরীরের পরিশ্রম হয় এবং স্বাভাবিকভাবেই শরীরে বেশি অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়। এই সময় শ্বাস-প্রশ্বাস দ্রুত হয়। নিয়মিত সাইকেল চালানোর ফলে ফুসফুসের ব্যায়াম হয় এবং এর কার্যক্ষমতা বাড়ে। এটি শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যা কমাতে সাহায্য করতে পারে।
পেশি শক্তিশালী করে: সাইকেল চালালে পায়ের পেশিতে সবচেয়ে বেশি চাপ পড়ে। এর ফলে পায়ের দারুণ ব্যায়াম হয়। নিয়মিত সাইকেল চালালে পায়ের পেশি সচল থাকে এবং পায়ের জোর বাড়ে। খুব দ্রুত গতিতে না চালিয়ে মাঝারি গতিতে সাইকেল চালানো পায়ের পেশির জন্য ভালো।
সুতরাং, যারা ব্যায়ামের কথা শুনলেই পিছিয়ে আসেন, তাদের জন্য সাইকেল হতে পারে এক আনন্দদায়ক শরীরচর্চার মাধ্যম। নিয়মিত সাইকেল চালিয়ে আপনিও পেতে পারেন সুস্থ ও সুন্দর জীবন।