গরমে মসুর ডাল খাওয়া কি শরীরের তাপমাত্রা বাড়ায় জানুন পুষ্টিবিদের মতামত

আমরা প্রায়ই বলে থাকি ‘মাছে ভাতে বাঙালি’। কিন্তু মাছ-ভাত রাখা হলেও খাদ্যতালিকায় এরপরই যে পদটি থাকে তা হচ্ছে মসুর ডাল। গরম কিংবা ঠান্ডা ভাত যাই হোক না কেন, সাথে মসুর ডাল লাগবেই। মসুর ডালে চুমুক দিলেই যেন তৃপ্তি। কেউ কেউ আবার এই ডাল ঘন করে রান্নার পর তা রুটি দিয়েও খেয়ে থাকেন। আসলে মুখের স্বাদে খাওয়া হয়।

বিভিন্ন উৎসব-আয়োজনে মসুর ডালের কদর থাকলেও কেউ কেউ আবার বাঁকা চোখেও দেখে থাকেন এই ডালকে। কেউ বলে থাকেন যে, গরমের সময় মসুর ডাল খেলে নাকি শরীরের তাপমাত্রা আরও বেড়ে যায়। এতে নাকি আরও গরম লাগে। এ নিয়ে নানা বিতর্ক দেখা যায়। বিষয়টি নিয়ে ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমের সাথে কথা বলেছেন কলকাতা শহরের এক বেসরকারি হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ শ্রাবণী মুখোপাধ্যায়। এবার তাহলে এ ব্যাপারে জেনে নেয়া যাক।

পুষ্টির ভাণ্ডার: মসুর ডাল হচ্ছে প্রোটিনের খনি। প্রতি ১০০ গ্রাম মসুর ডালে ২৫ গ্রাম পরিমাণ প্রোটিন পাওয়া যায়। এ জন্য প্রোটিনের ঘাটতি পূরণে নিয়মিত মসুর ডাল খাওয়া যেতে পারে। এছাড়াও আয়রন, সেলেনিয়াম, ফোলেট, থিয়ামিন ও রাইবোফ্ল্যাভিনের মতো ভিটামিন ও খনিজ রয়েছে এই ডালে। সবগুলো উপাদানই শরীরের জন্য উপকারী।

মসুর ডাল কি আসলেই শরীরের তাপমাত্রা বাড়ায়: এ ব্যাপারে পুষ্টিবিদ শ্রাবণী বলেন, অনেকেই মনে করেন মসুর ডাল খেলে শরীর গরম হয়। এ জন্য গ্রীষ্মকালে এই ডাল এড়িয়ে যাওয়ার কথা বলেন তারা। কিন্তু প্রকৃত অর্থে এই ধারণার কোনো সত্যতা নেই। এই ভুল ধারণা থেকে বের হতে হবে সবার। বরং শারীরিক কোনো সমস্যা না থাকলে নিয়মিত মসুর ডাল খেলে আরও উপকার মিলে।

অতিরিক্ত নয়: মুখরোচক কিংবা স্বাদ হওয়ার কারণে গরমের সময় অতিরিক্ত মসুর ডাল খাওয়া যাবে না। এ ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা হতে পারে। যেমন পেটের সমস্যা। এই ডাল প্রোটিনের ভাণ্ডার, একই সাথে এতে কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট ও ফাইবারও রয়েছে। এ জন্য মসুর ডাল হজম করা কঠিন। বিশেষ করে গ্রীষ্মের সময় হজমশক্তি স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা দুর্বল থাকে। এ জন্য এই সময় পরিমাণে কম খাওয়া উচিত। তা না হলে গ্যাস-অ্যাসিডিটি থেকে শুরু করে পেটের বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে।

দিনে কতটুকু: গরমের সময় দিনে ৩৫ থেকে ৪০ গ্রামের বেশি মসুর ডাল খাওয়া উচিত নয়। এর বেশি খাওয়া হলে নানা সমস্যা হতে পারে। মসুর ছাড়াও মুগ, ছোলা, মটরসহ অন্যান্য সব ডালই এই পরিমাণে খাওয়া উচিত। তবেই সুস্থ থাকা সম্ভব।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy