ওয়াই-ফাইয়ের অতিরিক্ত ব্যবহার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে বলে সম্প্রতি সতর্ক করেছে জার্মানির ফেডারেল অফিস ফর রেডিয়েশন প্রোটেকশন। সংস্থাটি তাদের সতর্কবার্তায় চলমান করোনা পরিস্থিতিতে হোম অফিসের কারণে ওয়াই-ফাইয়ের দীর্ঘ ও অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। তাদের মতে, দীর্ঘ সময় অনলাইনে থাকার কারণে মস্তিষ্ক ও স্নায়ুরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সতর্কবার্তায় উল্লেখ করা হয়েছে, করোনা সংকটের মধ্যে বহু মানুষ ঘর থেকে অফিসের কাজ করছেন এবং দীর্ঘ সময় ধরে অনলাইনে থাকছেন। এর ফলে ওয়াই-ফাইয়ের ব্যবহার বাড়ছে, যা স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
তবে, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এই বিষয়ে ভিন্ন মত পোষণ করছেন। তাদের বক্তব্য অনুযায়ী, ইলেকট্রিক ডিভাইস থেকে দুই ধরনের বিকিরণ নির্গত হয় – আয়নাইজিং ও নন-আয়নাইজিং। মাইক্রোওয়েভের মতো যন্ত্রে আয়নাইজিং বিকিরণ ব্যবহৃত হয়, যা তুলনামূলকভাবে ক্ষতিকর। অন্যদিকে, ওয়াই-ফাই ও ব্লুটুথের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয় নন-আয়নাইজিং বিকিরণ। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের বিকিরণ সাধারণত স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়।
অন্যদিকে, জার্মান ফেডারেল অফিস ফর রেডিয়েশন প্রোটেকশন ওয়াই-ফাইয়ের সম্ভাব্য কুপ্রভাব থেকে বাঁচতে কিছু পরামর্শ দিয়েছে। তাদের দেওয়া পরামর্শগুলো হলো:
ঘুমানোর সময় ওয়াই-ফাই রাউটার বন্ধ রাখা।
কাজের বিরতিতে রাউটার বা ব্লুটুথ স্পিকার বন্ধ রাখা।
প্রয়োজন না হলে ওয়াই-ফাই রাউটার চালু না করা এবং ফোনের এমবি প্যাকও বন্ধ রাখা।
সম্ভব হলে ওয়াই-ফাইয়ের পরিবর্তে তারযুক্ত ইন্টারনেট পরিষেবা ব্যবহার করা।
সতর্কবার্তায় আরও বলা হয়েছে যে অতিরিক্ত ওয়াই-ফাই ব্যবহারের ফলে মস্তিষ্কের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। এর কারণ হিসেবে তারা উল্লেখ করেছেন যে ওয়াই-ফাইয়ে ইলেকট্রো-ম্যাগনেটিক বিকিরণ চলতে থাকে এবং দীর্ঘক্ষণ ধরে এর সংস্পর্শে থাকলে স্নায়ুর উপর চাপ পড়তে পারে। সেই কারণে অপ্রয়োজনীয় ইন্টারনেট ব্যবহার থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ওয়াই-ফাইয়ের স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে বিশেষজ্ঞদের এই পরস্পরবিরোধী মতামতের মধ্যে সাধারণ মানুষ কিছুটা বিভ্রান্ত। তবে, স্বাস্থ্য সচেতনতা এবং সতর্কতা অবলম্বন করাই এই মুহূর্তে বুদ্ধিমানের কাজ বলে মনে করছেন অনেকে।