পরীক্ষার আগে পড়ায় মন বসছে না সন্তানের? এই ৫ উপায়ে দূর করুন অমনোযোগিতা!

সামনে পরীক্ষা, অথচ আপনার সন্তানের কিছুতেই পড়ালেখায় মন নেই! এমন পরিস্থিতিতে অনেক অভিভাবকই নিজেদের ‘ব্যর্থ’ মনে করেন এবং দুশ্চিন্তায় পড়েন। ছোট বাচ্চাদের শিক্ষার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত করা সত্যিই একটি কঠিন কাজ। পরীক্ষার সময় ঘনিয়ে এলে অভিভাবকদের মধ্যে চাপ সৃষ্টি হওয়া স্বাভাবিক।

আপনার সন্তানও যদি পড়াশোনায় অনীহা দেখায় এবং পড়ার সময় নানা অজুহাত দিতে শুরু করে, তাহলে এই পাঁচটি টিপস আপনার জন্য অত্যন্ত সহায়ক হতে পারে। এই পদ্ধতিগুলো অবলম্বন করে আপনি অল্প সময়ের মধ্যেই আপনার সন্তানের মধ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন দেখতে সক্ষম হবেন।

শিশুদের পড়ায় মনোযোগ ফেরাতে করুন এই ৫টি কাজ:

১. সন্তানের প্রচেষ্টার প্রশংসা করুন:

আপনার সন্তান যদি অল্প সময়ের জন্যও পড়াশোনা করতে বসে, তবে তার আন্তরিক প্রশংসা করুন। তাকে বুঝতে দিন যে তার পড়ালেখা করাটা আপনাদের সবাইকে খুশি করে। তার ছোট ছোট চেষ্টাকেও গুরুত্ব দিন এবং উৎসাহ জোগান। তাকে বকাবকি না করে, ধৈর্য ধরে তার হোমওয়ার্ক করতে সাহায্য করুন। আপনার ইতিবাচক মনোভাব তাকে পড়াশোনার প্রতি আগ্রহী করে তুলবে।

২. যোগব্যায়াম এবং ব্যায়াম করান:

বেশিরভাগ শিশুই পড়াশোনার সময় সহজে মনোযোগ ধরে রাখতে পারে না। সন্তানের একাগ্রতা বৃদ্ধির জন্য তাকে নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করান এবং যোগব্যায়াম শেখান। এটি তার মনকে শান্ত রাখতে এবং পড়াশোনার সময় মনোযোগ বাড়াতে সহায়ক হবে। সকালে ঘুম থেকে উঠে কিছুক্ষণ ব্যায়াম করলে সারাদিন তার মধ্যে একটি সতেজ ভাব বজায় থাকবে।

৩. অন্য শিশুদের সঙ্গে তুলনা করবেন না:

অনেক বাবা-মায়েরই তাদের সন্তানদের অন্যের সাথে তুলনা করার অভ্যাস থাকে। এটি সন্তানের মনে হীনমন্যতা এবং বিষণ্ণতা সৃষ্টি করতে পারে। এর পাশাপাশি তাদের মধ্যে অন্যদের প্রতি বিদ্বেষ বা উত্তেজনাও তৈরি হতে পারে। তাই কখনোই আপনার সন্তানের সামনে অন্য কোনো শিশুর সাথে তার তুলনা করবেন না। প্রত্যেক শিশুই আলাদা এবং তাদের নিজস্ব গতিতে শেখে।

৪. মারধর করে শেখানোর চেষ্টা করবেন না:

এখনও অনেক বাড়িতেই শিশুদের পড়ানোর জন্য শারীরিক শাস্তি দেওয়া হয়। মারধরের ভয়ে শিশুটি হয়তো বাধ্য হয়ে পড়তে বসবে, কিন্তু এতে তার মনে পড়াশোনার প্রতি কোনো আগ্রহ তৈরি হবে না এবং সে কিছুই ভালোভাবে শিখতে পারবে না। বরং মারধরের কারণে অনেক শিশুই পড়াশোনার প্রতি সম্পূর্ণভাবে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। শিশুরা জেদি হতে পারে, তবে তাদের মারধর করে শেখাতে বাধ্য না করে একটি বন্ধুত্বপূর্ণ এবং শেখার অনুকূল পরিবেশ তৈরি করুন।

৫. তাদের বন্ধুদের সাথে পড়াশোনা করতে উৎসাহিত করুন:

অনেক শিশুই একা একা পড়াশোনা করতে পছন্দ করে না, কিন্তু যদি তাদের ভাই, বোন বা বন্ধু তাদের সাথে বসে পড়াশোনা করে, তবে তারা মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করে। বন্ধুদের সাথে পড়াশোনা করলে তাদের মধ্যে একে অপরের কাছ থেকে আরও কিছু শেখার আগ্রহ তৈরি হয়। এই কারণে তারা পড়াশোনার প্রতি উৎসাহিত হতে শুরু করে। মাঝে মাঝে তাদের বন্ধুদের বাড়িতে ডেকে এনে একসাথে পড়ার ব্যবস্থা করতে পারেন অথবা আপনার বাড়িতেই তাদের জন্য একটি ছোট স্টাডি গ্রুপ তৈরি করতে পারেন।

এই সহজ পদ্ধতিগুলো অবলম্বন করে আপনি আপনার সন্তানের পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি করতে এবং তাদের মনোযোগ ফেরাতে সাহায্য করতে পারেন। মনে রাখবেন, ধৈর্য এবং ভালোবাসা দিয়ে শিশুদের পড়াশোনার প্রতি আগ্রহী করে তোলাই একজন অভিভাবকের প্রধান কাজ।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy