শীতকাল হোক বা অন্য কোনো সময়, ঠাণ্ডা লাগলে অনেকেরই গলাব্যথা ও টনসিলের সমস্যা দেখা দেয়। এই যন্ত্রণাদায়ক discomfort-কে অনেকেই সাধারণ গলাব্যথা ভেবে ভুল করেন এবং অবহেলা করেন। তবে টনসিলের সংক্রমণ কিন্তু মোটেও হালকাভাবে নেওয়ার মতো নয়।
আমাদের জিভের ঠিক পেছনে, গলার দেয়ালের দুই পাশে ছোট গোলাকার পিণ্ডের মতো যে জিনিসটি দেখা যায়, সেটাই হলো টনসিল। মূলত সর্দি-কাশির জন্য দায়ী ভাইরাসগুলোর মাধ্যমেই টনসিলে সংক্রমণ ঘটে এবং ব্যথা অনুভূত হয়। বাজারে এই সমস্যার সমাধানে বিভিন্ন ওষুধ ও সিরাপ পাওয়া গেলেও, কিছু সহজ ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করে টনসিলের ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। আসুন, সেই কার্যকরী উপায়গুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক:
পাতি লেবুর রস: টনসিলের সমস্যায় লেবুর রস অত্যন্ত উপকারী। এক গ্লাস হালকা গরম জলে এক চামচ পাতিলেবুর রস, এক চামচ মধু এবং আধা চামচ লবণ ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। যতদিন আপনার গলা ব্যথা না সারে, ততদিন পর্যন্ত এই মিশ্রণটি পান করতে থাকুন। এটি টনসিলের সংক্রমণ কমাতে এবং ব্যথা উপশমে সাহায্য করবে।
আদা চা: আদা তার অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদানের জন্য পরিচিত। দেড় কাপ জলে এক চামচ আদার কুচি এবং পরিমাণ মতো চা পাতা দিয়ে প্রায় দশ মিনিট ফুটিয়ে নিন। দিনে অন্তত তিন থেকে চারবার এই পানীয়টি পান করলে টনসিলের সংক্রমণ ছাড়াতে বাধা পাওয়া যায় এবং গলার ব্যথাও কমে আসে।
হলুদ দুধ: হলুদ একটি শক্তিশালী অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি, অ্যান্টি-বায়োটিক এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ উপাদান। এক কাপ গরম গরুর দুধে এক চিমটি হলুদ মিশিয়ে সামান্য গরম করে পান করলে টনসিলের ব্যথায় আরাম পাওয়া যায় এবং সংক্রমণও হ্রাস পায়।
গ্রিন-টি ও মধু: গ্রিন-টিতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে, যা শরীরের ক্ষতিকর জীবাণু ধ্বংস করতে সাহায্য করে। এক কাপ গরম জলে গ্রিন-টি এবং এক চামচ মধু মিশিয়ে দশ মিনিট ফুটিয়ে নিন। এরপর ধীরে ধীরে চুমুক দিয়ে এই চা পান করুন। দিনে তিন থেকে চার কাপ এই মধু মিশ্রিত গ্রিন-টি পান করলে টনসিলের সমস্যায় উপকার পাওয়া যায়।
টনসিলের ব্যথা কমাতে এই ঘরোয়া উপায়গুলো বেশ কার্যকর। তবে যদি ব্যথা তীব্র হয় এবং দীর্ঘ সময় ধরে থাকে, তাহলে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু করলে এই সমস্যা থেকে দ্রুত মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
