খাবারের পরেই চা-কফি খাচ্ছেন? অজান্তেই করছেন মারাত্মক ভুল! জানালেন পুষ্টিবিদ

চা এবং কফি শুধু পানীয় নয়, এগুলো আমাদের তাৎক্ষণিক শক্তি যোগাতে এবং সতেজ রাখতে দারুণ কাজ করে। যেকোনো আড্ডা কিংবা মিটিংয়ে এক কাপ চা বা কফির অনুপস্থিতি যেন পরিবেশটাই বেমানান করে তোলে। বিভিন্ন গবেষণা বলছে, কাজে মনোযোগ বাড়াতেও এই পানীয় দুটির জুড়ি মেলা ভার। তবে দুঃখজনক হলেও সত্যি, এই জনপ্রিয় পানীয়গুলোরও কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে, বিশেষ করে যদি তা সঠিকভাবে গ্রহণ করা না হয়।

এ কারণেই বিশেষজ্ঞরা সবসময় এই ধরনের পানীয়তে চুমুক দেওয়ার সঠিক সময় এবং পদ্ধতি সম্পর্কে পরামর্শ দেন। খাবারের ঠিক পরেই চা কিংবা কফি খাওয়া উচিত কি না, এই নিয়ে অনেকের মনেই দ্বিধা থাকে। সম্প্রতি, ভারতীয় পুষ্টিবিদ নমামি আগরওয়াল ইনস্টাগ্রামে একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন। সেখানে তিনি স্পষ্ট করে ব্যাখ্যা করেছেন যে মূল খাবারের সাথে কফি বা চা পান করা একটি অত্যন্ত সাধারণ অথচ মারাত্মক খাদ্য ভুল।

প্রতিদিন কফি এবং চা পান করা কি আদৌ স্বাস্থ্যকর?

কফি এবং চা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। আমাদের মধ্যে অনেকেই এক কাপ গরম চা বা কফি ছাড়া দিনের শুরুটা কল্পনাও করতে পারেন না। এই পানীয়গুলোতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের শরীর থেকে টক্সিন বের করে দিতে সাহায্য করে। একই সাথে, একটি সতেজ দিন শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তিও যোগায়। তবে অতিরিক্ত পরিমাণে চা বা কফি পান করলে তা শরীরের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

কফি এবং চায়ে ট্যানিন নামক একটি উপাদান থাকে, যা শরীর থেকে তরল বের করে দেওয়ার প্রবণতা রাখে। এর অর্থ হলো, এই পানীয় অতিরিক্ত পরিমাণে পান করলে ডিহাইড্রেশন এবং এর সাথে সম্পর্কিত বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি বাড়তে পারে। তাই বিশেষজ্ঞরা সবসময় পরিমিত পরিমাণে এই পানীয় উপভোগ করার পরামর্শ দেন।

খাবারের সাথে সাথেই কফি বা চা পান করা কি উচিত?

আমরা প্রায় সকলেই সকালের বা সন্ধ্যার নাস্তার সাথে কফি কিংবা চা পান করে থাকি। তবে পুষ্টিবিদ নমামি আগরওয়াল বলছেন, এটি একটি ভুল অভ্যাস। এর কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেছেন যে, খাবারের সাথে কফি বা চায়ে চুমুক দিলে তা শরীরের পুষ্টির শোষণ, বিশেষ করে আয়রনের শোষণ প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, চা এবং কফি উভয় পানীয়তেই পলিফেনল এবং ট্যানিনের মতো যৌগ থাকে, যা আয়রনের সাথে আবদ্ধ হওয়ার জন্য পরিচিত। এর ফলে শরীর দ্বারা আয়রন শোষণ করা কঠিন হয়ে পড়ে।

নমামি আরও বলেন যে, খাবারের সাথে চা-কফি খাওয়ার অভ্যাস নন-হিম আয়রনের শোষণকে বিশেষভাবে প্রভাবিত করতে পারে। এই নন-হিম আয়রন মূলত উদ্ভিদ-ভিত্তিক উৎস থেকে আসে এবং প্রাণিজ পণ্য থেকে পাওয়া হিম আয়রনের তুলনায় কম দক্ষতার সাথে শোষিত হয়। তাই যদি আপনার খাবারের সাথে বা ভরা পেটে চা কিংবা কফি খাওয়ার অভ্যাস থাকে, তাহলে তা অবশ্যই ত্যাগ করা উচিত। মূল খাবারের অন্তত আধা ঘণ্টা থেকে চল্লিশ মিনিট পর চা বা কফির মতো পানীয় পান করাই স্বাস্থ্যসম্মত।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy