ওজন কমানোর জন্য অনেকেই কঠোর ডায়েট এবং শরীরচর্চার রুটিন মেনে চলেন। তবে দীর্ঘ দিন এই নিয়ম অনুসরণ করা অনেকের পক্ষেই কঠিন হয়ে পড়ে। ফলে ওজন কমানোর লক্ষ্যও পূরণ হয় না। তবে জেনে অবাক হবেন, নিয়মিত কিছু ঘরোয়া কাজ করেই আপনি ব্যায়াম ও ডায়েটের ঝামেলা ছাড়াই ওজন কমাতে পারেন!
হ্যাঁ, আপনার দৈনন্দিন জীবনে এমন কিছু কাজ রয়েছে যা ক্যালোরি ঝরাতে এবং মেদ কমাতে সহায়ক হতে পারে। চলুন, জেনে নেওয়া যাক সেই ঘরোয়া কাজগুলো সম্পর্কে:
ঘর মোছা:
ঘর মোছা শুধু আপনার বাড়িকে পরিষ্কারই রাখে না, এটি আপনার বাহু এবং হাতের পেশীগুলির জন্য একটি চমৎকার ব্যায়ামও বটে। যখন আপনি ঘর মোছার সময় সামনে-পেছনে ঘোরেন, তখন আপনার পিঠ এবং বুকের পেশী শক্তিশালী হয় এবং পেটের পেশীগুলিও ভালোভাবে প্রসারিত হয়। আরও ভালো ফল পেতে ঘর মোছার ব্রাশ ব্যবহার না করে হাঁটু এবং হাতের উপর ভর দিয়ে ঘর মোছার চেষ্টা করুন।
ঝাড়ু দেওয়া:
ধুলোবালি কারোরই পছন্দ নয়, তবে ঝাড়ু দেওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ গৃহস্থালি কাজ যা আপনার শরীরকে সক্রিয় রাখে। ঝাড়ু দেওয়ার সময় আপনাকে বারবার উঁচু-নিচু হতে হয় এবং সামনে-পেছনে হাঁটতে হয়। এই পুনরাবৃত্তিমূলক নড়াচড়া আপনার শরীরকে সচল রাখে এবং পেটের চর্বি কমাতে সাহায্য করে।
কাপড়-চোপড় পরিষ্কার করা:
কাপড় ধোয়া একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যায়াম হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে, যা একই সময়ে আপনার হাত, পা এবং পেশীগুলোকে কাজে লাগায়। জল থেকে কাপড় টেনে তোলা, সেগুলোকে কচলানো এবং রোদে শুকাতে দেওয়ার মতো কাজগুলি আপনাকে বারবার নড়াচড়া করতে, ঝুঁকতে এবং দাঁড়াতে সাহায্য করে। এটি ক্যালোরি ঝরানোর একটি কার্যকর উপায়।
রান্না করা:
নিজের জন্য রান্না করা সবসময়ই একটি স্বাস্থ্যকর সিদ্ধান্ত, কারণ রান্নার সময় আপনি বাটার, লবণ এবং অন্যান্য উপাদানের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। স্বাস্থ্যকর খাবার তৈরি করা শুধু আপনাকে ভালো খাবারই দেয় না, এটি কারও কারও মানসিক চাপও কমায়। জিনিসপত্র খোঁজা, কাটাকাটি করা, দাঁড়িয়ে থাকা এবং বসার মতো বিভিন্ন কার্যকলাপ একটি চমৎকার ব্যায়াম যা আপনার পেট সহ শরীরের সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে কাজে লাগায়। আর স্বাস্থ্যকর খাবার রান্নার পর বাসনপত্র পরিষ্কার করাও একটি ভালো ব্যায়াম, যা মূলত আপনার বাহু এবং পেটের পেশীগুলিকে লক্ষ্য করে এবং পুরো শরীরকে নাড়াচাড়া করায়।
সুতরাং, ওজন কমানোর জন্য জিমে যাওয়ার বা কঠোর ডায়েট মেনে চলার সময় না থাকলে হতাশ হবেন না। নিয়মিত এই ঘরোয়া কাজগুলি করুন এবং দেখুন, ধীরে ধীরে আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে আসছে। তবে মনে রাখবেন, সুষম খাদ্যাভ্যাসও সুস্থ থাকার জন্য জরুরি।