বিশ্বে বিরল! ৬ আঙুল থেকে গোল্ডেন ব্লাড, জানুন কিছু ব্যতিক্রমী শারীরিক বৈশিষ্ট্য

পৃথিবীতে এমন অনেক মানুষ আছেন যাদের শরীরে কোনো না কোনো অতিরিক্ত অঙ্গ অথবা বিশেষ চিহ্ন থাকে যা তাদেরকে অন্যদের থেকে আলাদা করে তোলে। বিশ্বে খুব কম সংখ্যক মানুষের মধ্যে এই বিরল বৈশিষ্ট্যগুলি দেখা যাওয়ায় অনেক সময় তাদেরকে ভাগ্যবানও বলা হয়ে থাকে।

যেমন, কেউ জন্মায় হাতে অতিরিক্ত একটি আঙুল নিয়ে, অর্থাৎ ছয়টি আঙুল। আবার কারও বুকে থাকে অতিরিক্ত একটি পাঁজর। এমনকি বিশ্বে এমন কয়েকজন ব্যক্তিও আছেন যাদের রক্ত ‘গোল্ডেন ব্লাড’ নামে পরিচিত। আসুন জেনে নেওয়া যাক তেমনই কিছু ব্যতিক্রমী শারীরিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে—

১. ছয় আঙুল:

তিনটি ফ্যালাঞ্জসহ বুড়ো আঙুল নিয়ে জন্মগ্রহণের ঘটনা নিঃসন্দেহে অস্বাভাবিক এবং বিরল। জানা যায়, প্রতি ১০০০ জনের মধ্যে মাত্র ১ জনের ক্ষেত্রে এমনটি ঘটে। অন্যদিকে, ২৫০০০ জনের মধ্যে মাত্র একজন তিনটি ফ্যালাঞ্জসহ ছয়টি আঙুল নিয়ে জন্মায়। অনেকেই ছয় আঙুলকে অক্ষমতা হিসেবে দেখলেও, কিছু ক্ষেত্রে এর বড় সুবিধা রয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এমন ব্যক্তিদের মস্তিষ্ক অতিরিক্ত অঙ্গটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পুরোপুরি সক্ষম।

২. অতিরিক্ত পাঁজর:

অধিকাংশ মানুষের বুকেই ২৪টি পাঁজর (১২ জোড়া) থাকে। তবে কিছু মানুষের ডান, বাম অথবা উভয় দিকে একটি অতিরিক্ত পাঁজর দেখা যায়। অনেক সময় এক্স-রেতেও এটি ধরা নাও পড়তে পারে, কারণ এর টিস্যু ফাইবারগুলি খুবই পাতলা থাকে। কেউ কেউ আজীবন এই অতিরিক্ত পাঁজর নিয়েই জীবনযাপন করেন। এই ধরনের পাঁজর ততক্ষণ বিপজ্জনক নয়, যতক্ষণ না তা রক্তনালী বা স্নায়ুর উপর চাপ সৃষ্টি করে।

৩. গোল্ডেন ব্লাড:

বিশ্বে মাত্র ৫০ জনের শরীরে বইছে ‘গোল্ডেন ব্লাড’ বা সোনালি রক্ত। এর অর্থ এই নয় যে তাদের রক্ত সত্যিই সোনালি রঙের, আসলে এটি একটি বিরল রক্তের ধরন। এই রক্তে সম্পূর্ণরূপে আরএইচ অ্যান্টিজেনের অভাব থাকে। ১৯৬১ সালে প্রথম এক আদিবাসী অস্ট্রেলিয়ান ব্যক্তির রক্তে এই ধরনটি শনাক্ত করা যায়। তারপর থেকে এ পর্যন্ত বিশ্বে মাত্র ৫০ জনের শরীরে এই বিরল রক্ত পাওয়া গেছে।

৪. কানের উপরের ছোট্ট ছিদ্র:

পুরো বিশ্বে মাত্র ১-১০ শতাংশ শিশু কানের উপরে এমন ছোট্ট ছিদ্র নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। এই বৈশিষ্ট্য আসলে ভ্রূণাবস্থার উন্নয়নের সঙ্গে যুক্ত এবং অনেক সময় এটি সংক্রমণের কারণ হতে পারে, যার ফলে ব্যথা ও ফুলে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়।

৫. মজবুত হাড়ের অধিকারী:

কিছু মানুষ অস্বাভাবিক শক্তিশালী হাড় নিয়ে জন্মায়। অতিরিক্ত সক্রিয় এলআরপি৫ জিনের কারণে তাদের কঙ্কালের গঠনে অস্বাভাবিক ঘনত্ব দেখা যায়। তাদের হাড় এতটাই শক্তিশালী হয় যে সাঁতার কাটার সময় জলের উপর ভেসে থাকতেও কষ্ট হয়।

৬. চুল আঁচড়ানো যায় না:

চুল পড়ার সমস্যায় কমবেশি সকলেই ভোগেন। এর অন্যতম কারণ হতে পারে নিয়মিত চুল না আঁচড়ানো। চুলের সৌন্দর্য রক্ষা ও পরিপাটি রাখতে চিরুনির বিকল্প নেই। তবে বিশ্বে এমন কিছু মানুষও আছেন যাদের চুল কিছুতেই আঁচড়ানো যায় না। এই সমস্যাকে ‘স্পুন গ্লাস হেয়ার’ বলা হয়। এমন ব্যক্তিদের চুল এতটাই শুষ্ক ও ঝরঝরে হয় যে, আঁচড়ানোর সময় তা ছিঁড়ে যায়। কারণ এই ধরনের চুল খুবই ভঙ্গুর প্রকৃতির হয়।

৭. কবজির উপর এই পেশি:

ভাগ্যবান কিছু মানুষের কবজির উপর একটি বিশেষ পেশি দেখা যায়। আপনিও তাদের মধ্যে কি না তা জানতে, হাতের তালু একটি সমতল স্থানে রাখুন। এরপর বুড়ো আঙুল ও কনিষ্ঠ আঙুল উঁচু করে একসঙ্গে লাগানোর চেষ্টা করুন। যদি আপনার কবজির উপর একটি উঁচু রেখার মতো কিছু দেখা যায়, তাহলে বুঝবেন আপনার শরীরে এই বিরল বৈশিষ্ট্যটি রয়েছে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy