বর্ষাকাল মানেই বিভিন্ন রোগ-ব্যাধির আনাগোনা। এই সময় ভাইরাস ফিভার বা বর্ষাকালীন জ্বর একটি সাধারণ সমস্যা। এ জ্বরে শরীর এতটাই দুর্বল হয়ে পড়ে যে, সামান্য নড়াচড়া করতেও কষ্ট হয়। কর্মক্ষমতা একেবারে কমে যায়। ভাইরাস জ্বর অত্যন্ত ছোঁয়াচে এবং পরিবারের একজনের হলে খুব দ্রুত অন্যদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে শিশুরা এতে বেশি আক্রান্ত হয়।
বর্ষাকালে গরমের তীব্রতা বজায় থাকার পাশাপাশি মাঝে মাঝে হালকা বৃষ্টিতে আবহাওয়া আরও আর্দ্র ও অস্বস্তিকর হয়ে ওঠে। এই ভেজা গরমে ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া এবং ভাইরাস জ্বর ঘরে ঘরে দেখা দিচ্ছে। এই জ্বর ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়াজনিত হতে পারে এবং এর তাপমাত্রা ১০১ থেকে ১০২ ডিগ্রি পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তিরা শরীরে তীব্র ব্যথা, মাথাব্যথা এবং খাবারে চরম অনীহা অনুভব করেন। শরীর অত্যন্ত দুর্বল লাগে। এই জ্বরের স্থায়িত্ব সাধারণত তিন থেকে পাঁচ দিন পর্যন্ত হতে পারে।
জ্বরের সময় চোখ লালচে হওয়া, খাবারের প্রতি অনীহা, নাক দিয়ে জল পড়া, খুসখুসে কাশি এবং কখনো কখনো বেশি মাত্রায় কাশি দেখা যেতে পারে। তবে এই জ্বরে আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই, কারণ এটি সাধারণত তিন থেকে পাঁচ দিনের মধ্যেই সেরে যায়।
ভাইরাস জ্বরের জন্য তেমন কোনো নির্দিষ্ট ওষুধের প্রয়োজন হয় না। জ্বর হলে প্যারাসিটামল বা পেইনকিলার খাওয়া যেতে পারে, তবে অবশ্যই ভরা পেটে। যদি পাঁচ দিন পরেও জ্বর না সারে, তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত এবং রক্ত পরীক্ষা করে টাইফয়েড, প্যারাটাইফয়েড বা ডেঙ্গি জ্বর হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন।
জ্বরের সময় ঠান্ডা জলে মাথা ধুলে আরাম পাওয়া যায় এবং কিছুক্ষণ পর ভেজা পরিষ্কার কাপড় দিয়ে শরীর মুছে নিলে তাপমাত্রা কিছুটা কমে আসে। খুসখুসে কাশি হলে কফ সিরাপ খাওয়া যেতে পারে। অ্যান্টি অ্যালার্জি ওষুধ খেলে উপকার পাওয়া যায়। পথ্য হিসেবে আনারস, কাগজি লেবু এবং কালিজিরা ভর্তা দিয়ে গরম ভাত খুবই উপকারী। পর্যাপ্ত পরিমাণে শরবত ও আনারসের রস পান করা শরীরকে সতেজ রাখতে সাহায্য করে।
এই সময় ব্যক্তিগত hygiene বজায় রাখা এবং অন্যদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা জরুরি, যাতে সংক্রমণ ছড়িয়ে না পড়ে। সামান্য সচেতনতা অবলম্বন করলেই বর্ষাকালীন ভাইরাস জ্বর থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।