অনেকের শরীরেই ছোট ছোট, নরম ত্বকের বাড়তি অংশ দেখা যায়, যা আঁচিল নামে পরিচিত। ত্বকের এই বিব্রতকর সমস্যাটি শরীরের যেকোনো স্থানে হতে পারে। রঞ্জক কোষ একত্রিত হয়ে ত্বকে কালো দাগ সৃষ্টি করে এবং সেটাই আঁচিল রূপে দেখা দেয়।
আঁচিল মূলত একটি ভাইরাসজনিত সংক্রমণ। এটি হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি)-এর বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণের কারণে হয়ে থাকে। মানবদেহে প্রায় ১০ ধরনের আঁচিল বা ফুসকুড়ি দেখা যেতে পারে, যার বেশিরভাগই নিরীহ বলে মনে করা হয়। এগুলি সাধারণত বাদামী, কালো, লাল, গোলাপি বা ত্বকের স্বাভাবিক রঙেরও হতে পারে। আঁচিলের আকার, আকৃতি এবং রঙ ব্যক্তিভেদে ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে।
আঁচিল দূর করার জন্য বাজারে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ এবং লেজার বা অন্যান্য চিকিৎসা পদ্ধতি প্রচলিত আছে। তবে কিছু সহজ ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করেও এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। চলুন, জেনে নেওয়া যাক তেমনই কিছু কার্যকরী পদ্ধতি:
অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার:
আঁচিল দূর করার ক্ষেত্রে অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার বেশ কার্যকর একটি উপাদান। এর অ্যাসিডিক উপাদান আঁচিলের কোষ ভেঙে দিয়ে ধীরে ধীরে আঁচিল নির্মূল করতে সাহায্য করে।
একটি তুলোর বল অ্যাপেল সাইডার ভিনেগারে ভালোভাবে ভিজিয়ে নিন।
ভিজানো তুলোটি সরাসরি আঁচিলের উপর লাগান এবং হালকাভাবে ম্যাসাজ করুন।
তিন থেকে চার ঘণ্টা পর কুসুম গরম জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
ভালো ফল পেতে এটি দিনে তিন থেকে চার বার ব্যবহার করুন।
এভাবে নিয়মিত দুই থেকে চার সপ্তাহ ব্যবহার করলে ধীরে ধীরে আঁচিল কমে যাবে।
ক্যাস্টর অয়েল:
ক্যাস্টর অয়েল এবং বেকিং সোডার মিশ্রণও আঁচিল নিরাময়ে সহায়ক হতে পারে।
দুই টেবিল চামচ ক্যাস্টর অয়েলের সঙ্গে এক টেবিল চামচ বেকিং সোডা ভালোভাবে মিশিয়ে নিন।
ইচ্ছা করলে এর সঙ্গে কয়েক ফোঁটা লেমন অয়েল অথবা পিপারমেন্ট অয়েল মেশাতে পারেন।
তৈরি করা মিশ্রণটি সরাসরি আঁচিলের উপর লাগান।
এভাবে সারা রাত রেখে দিন।
পরের দিন সকালে কুসুম গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
এটি প্রতিদিন ব্যবহার করুন। কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই আপনি পরিবর্তন লক্ষ্য করতে পারবেন।
এই ঘরোয়া পদ্ধতিগুলি ধৈর্য ধরে নিয়মিত ব্যবহার করলে আঁচিলের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। তবে যদি আঁচিলের আকার খুব বড় হয় বা দীর্ঘদিন ধরে সমস্যা থাকে, তবে অবশ্যই একজন ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।