যেকোনো তরকারিতে এলাচ না পড়লে যেন স্বাদ খোলে না। পায়েসের সুগন্ধ এবং স্বাদ কয়েকগুণ বাড়িয়ে তোলে এই ছোট্ট মশলাটি। অনেকেই খাবার পর মুখশুদ্ধি হিসেবে এলাচ খান। তবে এমন মানুষও আছেন যাদের খাওয়ার সময় এলাচ মুখে পড়লে মেজাজটাই খারাপ হয়ে যায়!
তবে শুধু রান্নায় স্বাদ বৃদ্ধিতেই নয়, নিয়মিত একটি করে এলাচ খেলে শরীরের নানা রকম সমস্যার সমাধানও মিলতে পারে, এমনটাই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। জেনে নিন সেই আশ্চর্য উপকারিতাগুলো:
১. পেটের সমস্যা ও হজমে সহায়ক: আদার মতোই এলাচ পেটের নানা সমস্যা এবং হজমের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে। অ্যাসিডিটির সমস্যা দূর করতে এটি অত্যন্ত কার্যকর। এলাচ বিপাকতন্ত্রকে সক্রিয় রাখে এবং হজমে সাহায্য করে। বুক জ্বালা ও বমি বমি ভাব থেকে মুক্তি পেতে মুখে একটি এলাচ রাখুন।
২. টক্সিন দূর করে ত্বক রাখে টানটান: এলাচ দেহের ক্ষতিকর টক্সিন দূর করতে সহায়ক। যাদের ত্বকে বয়সের ছাপ পড়তে শুরু করেছে, তারা নিয়মিত সকালে খালি পেটে এলাচ ভেজানো জল খেলে ত্বক টানটান থাকে এবং উজ্জ্বলতা বাড়ে।
৩. শ্বাসকষ্টে আরাম: মধু, লেবুর রস ও গরম জলের সঙ্গে একটি এলাচ মিশিয়ে পান করলে শ্বাসকষ্ট দূর হয়। যারা হুপিংকাশি ও ফুসফুস সংক্রমণের মতো সমস্যায় ভোগেন, এলাচ তাদের জন্য খুবই উপকারী।
৪. হৃদরোগ ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে: এলাচ হাঁপানি ও হৃদরোগ নিরাময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি হৃদস্পন্দন স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। এছাড়াও এলাচ রক্তসঞ্চালনেও সহায়ক। প্রতিদিন এলাচ খেলে রক্তের ঘনত্ব সঠিক থাকে।
৫. মুখের দুর্গন্ধ দূর করে: মুখে খুব বেশি দুর্গন্ধ হলে একটি এলাচ নিয়ে চিবোতে থাকুন। এলাচ মুখের দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়াগুলো ধ্বংস করে। এছাড়াও মাড়ির ইনফেকশন, মুখের ফোঁড়াসহ দাঁত ও মাড়ির নানা সমস্যা থেকে রক্ষা করে।
৬. ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়ক: গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত এলাচ খাওয়ার অভ্যাস ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়তা করে। এলাচ দেহে ক্যানসারের কোষ গঠনে বাধা প্রদান করতে পারে।
৭. পেশির টান কমায়: অনেক সময় ভারী কোনো জিনিস তুলতে গেলে পেশিতে টান ধরে। এ ক্ষেত্রে ছোট বা বড় এলাচ গরম জলে ফুটিয়ে খেলে তাৎক্ষণিক উপশম পাওয়া যায়।
৮. মাথাব্যথা ও মানসিক চাপ কমায়: গরম জলে চা পাতা, এলাচ গুঁড়ো ও মধু দিয়ে ফুটিয়ে তৈরি করে নিন এলাচ চা। মাথাব্যথা করলে এক কাপ গরম এলাচ চা খেলে নিমেষেই ব্যথা দূর হবে। এছাড়াও এলাচ মানসিক চাপ কমাতেও সাহায্য করে।
৯. সর্দি-কাশিতে উপকারী: এলাচ অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে ভরপুর। সর্দি-কাশির সমস্যায় এলাচ খেলে দ্রুত সুফল পাওয়া যায়।
সুতরাং, রান্নার স্বাদ বৃদ্ধি ছাড়াও এলাচের যে এত গুণাগুণ রয়েছে, তা জেনে নিশ্চয়ই অবাক হচ্ছেন। নিয়মিত একটি এলাচ খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন এবং বহু রোগ থেকে মুক্তি পান।