দম্পতিদের মধ্যে সম্পর্কের শুরুটা প্রায় সবসময়ই মধুর হয়। তবে সময়ের সাথে সাথে সেই উষ্ণতা বজায় রাখাটাই আসল চ্যালেঞ্জ। শুধু মনে মনে গভীর ভালোবাসা অনুভব করাই যথেষ্ট নয়, তাকে কাজের মাধ্যমে প্রমাণ করা এবং স্পর্শের মাধ্যমে সেই অনুভূতি প্রকাশ করাও সমানভাবে জরুরি, এমনটাই মনে করেন মনোবিদ ও সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দম্পতিদের মধ্যে দিনে অন্তত একবার ‘উত্তেজক স্পর্শ’ প্রয়োজন। প্রতিদিনের এই রোমান্টিক মুহূর্তগুলো যদি অনুপস্থিত থাকে, তবে সেই সম্পর্ককে প্রেম-ভালোবাসার বন্ধন না বলে ব্যবসায়িক অংশীদারিত্বের সঙ্গেই তুলনা করা চলে। ‘স্পর্শ’ কেন এত গুরুত্বপূর্ণ, তা নিয়ে একাধিক গবেষণা বিদ্যমান:
১. মায়ামি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘টাচ রিসার্চ ইনস্টিটিউট’-এর মনোবিদ টিফানি ফিল্ড দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে এই বিষয়ে গবেষণা করছেন। তাঁর মতে, ভালোবাসার মানুষের স্পর্শ মানসিক চাপ কমাতে অত্যন্ত সহায়ক। তা সম্পর্কজনিত হোক, কর্মক্ষেত্রের হোক কিংবা অন্য কোনো ধরনের মানসিক চাপ।
২. কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক পাভেল গোল্ডস্টেইনও প্রায় একই সুর শোনা যায়। ‘নেচার’ পত্রিকায় প্রকাশিত তাঁর একটি গবেষণাপত্রে তিনি উল্লেখ করেছেন যে স্বামী বা স্ত্রী অথবা অন্য কোনো প্রিয়জনের স্পর্শ শারীরিক যন্ত্রণা উপশমে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে।
৩. ভালোবাসার মানুষকে আলিঙ্গন করলে বা স্পর্শ করলে যে সম্পর্কের গভীরতা বাড়ে, তা উপলব্ধি করার জন্য কোনো গবেষণাপত্রের প্রয়োজন হয় না। এই বিষয়ে কিনসে ইনস্টিটিউটের গবেষক হেলেন ফিশারের বক্তব্য, ‘স্পর্শ করা মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি, আমাদের মস্তিষ্ক সেইভাবেই গঠিত।’
এই সমস্ত দিক বিবেচনা করেই সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ, থেরাপিস্ট এবং মনোবিদরা মনে করেন, দিনের মধ্যে যত বেশিবার সম্ভব ভালোবাসার মানুষটিকে স্পর্শ করা উচিত, ততই সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে। কারও মতে, দিনে গড়ে ৮ থেকে ১০ বার অর্থপূর্ণ স্পর্শ (meaningful touch) বৈবাহিক সম্পর্ককে মজবুত করে তোলে। অন্যদিকে, প্রেমিক-প্রেমিকারা যদি দিনে অন্তত একবার একে অপরকে স্পর্শ করেন, তবে সেই সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
অতএব, আপনার সম্পর্কের উষ্ণতা এবং গভীরতা বজায় রাখতে আজ থেকেই আপনার সঙ্গীকে স্পর্শের মাধ্যমে ভালোবাসা প্রকাশ করা শুরু করুন। একটি সামান্য স্পর্শও অনেক সময় গভীর অনুভূতির বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে পারে এবং আপনাদের বন্ধনকে আরও শক্তিশালী করতে পারে।