ফাস্ট ফুড খাচ্ছেন? অজান্তেই কমছে আয়ু! জানুন, কোন খাবারে কত মিনিট জীবন হারাচ্ছেন

বেঁচে থাকার জন্য পর্যাপ্ত জল ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ অপরিহার্য। বিশেষজ্ঞরা ফাস্টফুড জাতীয় খাবার পরিহার করার পরামর্শ দিলেও, স্বাদের টানে অনেকেই কম-বেশি এসব খাবারে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন। তবে জানেন কি, নিয়মিত বার্গার-পিজ্জার মতো মুখরোচক ফাস্ট ফুড খেয়ে আপনি নিজের অজান্তেই কমিয়ে ফেলছেন আপনার আয়ু? এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছেন গবেষকরা।

গবেষকরা বলছেন, ফাস্ট ফুড শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমানোর পাশাপাশি আয়ুও হ্রাস করে। সম্প্রতি মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞরা কার্বন ফুটপ্রিন্টস এবং পুষ্টির ভিত্তিতে কিছু খাদ্য সামগ্রী বিশ্লেষণ করে এই তথ্য জানিয়েছেন। ‘নেচার ফুড’ জার্নালে এই গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে।

গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, ৬১ গ্রাম প্রক্রিয়াজাত মাংসযুক্ত একটি হটডগ স্যান্ডউইচ একজন ব্যক্তির জীবনের ৩৬ মিনিট পর্যন্ত কমিয়ে দিতে পারে। হটডগে পলিউনস্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং ফাইবার থাকলেও এটি আয়ু কমাতে পারে। অন্যদিকে, পিনাট বাটার ও জ্যাম স্যান্ডউইচ খেলে আয়ু ৩০ মিনিটেরও বেশি বাড়তে পারে। পিজ্জা, বেকন এবং বার্গারের মতো খাবারও আয়ু কমিয়ে দেয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এক টুকরো পিজ্জা খেলে একজন ব্যক্তির জীবনের প্রায় ১০ মিনিট ফুরিয়ে যায়।

তবে আশার কথা হলো, কিছু খাবার রয়েছে যা আপনার আয়ু বাড়াতে সহায়ক। গবেষণায় দেখা গেছে, বাদাম খেলে ২ মিনিটের বেশি আয়ু যোগ হয়, এবং একটি কলা খেলে আয়ু ১৩ মিনিট পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও, টমেটো সাড়ে ৩ মিনিটের বেশি এবং অ্যাভোকাডো ২ মিনিট ৪ সেকেন্ড পর্যন্ত জীবন বাড়াতে পারে। তবে যেকোনো ধরনের কোমল পানীয় (সফট ড্রিঙ্কস) খেলে আয়ু কমে প্রায় ১২ মিনিট ৪ সেকেন্ড।

পুষ্টিকর এবং আয়ু বৃদ্ধিকারী খাবারের তালিকায় স্যামন মাছ সবুজ সংকেত পেয়েছে। তথ্য অনুসারে, স্যামন মাছ একজনের জীবন ১৬ মিনিট পর্যন্ত বাড়িয়ে দিতে পারে।

গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই গবেষণা শুধু স্বাস্থ্যকর জীবন সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করাই নয়, পরিবেশের উপর ভালো প্রভাব ফেলতেও সাহায্য করবে। গবেষকরা প্রতিটি খাবারকে রেটিং দিয়েছেন, যা নির্দেশ করে কোন খাবার কম খাওয়া উচিত এবং কোনটি বেশি।

এই গবেষণার প্রধান গবেষক ক্যাটরিনা স্টাইলিয়ানুর জানান, উদ্ভিদভিত্তিক খাবারের কর্মক্ষমতা তুলনামূলকভাবে বেশি। উদ্ভিদভিত্তিক খাদ্য এবং প্রাণীভিত্তিক খাদ্যের মধ্যে পুষ্টিগুণ এবং পরিবেশগত প্রভাবের দিক থেকে অনেক পার্থক্য রয়েছে।

সুতরাং, যদি আপনি দীর্ঘ ও সুস্থ জীবন চান, তাহলে ফাস্ট ফুডের মোহ ত্যাগ করে পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের দিকে মনোনিবেশ করুন। আপনার খাদ্যতালিকা পরিবর্তন করে আপনি কেবল নিজের স্বাস্থ্যই রক্ষা করবেন না, বরং দীর্ঘজীবী হওয়ার সম্ভাবনাও বাড়িয়ে তুলবেন।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy